বৃষ্টি পরছে, হাওয়া বইছে
আকাশ যেন ভিজে গলিতে হারিয়ে যাওয়া সুর।
এই শতদল-ভেজা সকালে
নেফারতি, ক্লিওপেট্রা, হেলেন, বনলতা, রাধা, দ্রৌপদী, লায়লী ও আমি জমিয়েছি তুমুল আড্ডা।
নেফারতিতি সুর মিশিয়ে বলল,
“আমার সুর্যাস্তের দেশেও রাত্রি আসে,
কিন্তু সেভাবে নয়, যেমন প্রেমের ইতিহাসে অন্ধকার ছায়া।”
ক্লিওপেট্রা হেসে উঠে বলল,
“নীরবতারও রাজনৈতিক ভাষ্য আছে, জানো?
কখনো কখনো বিষপানই শ্রেষ্ঠ কূটনীতি।”
হেলেন চুল ছুঁয়ে বলল,
“যুদ্ধের পেছনে দেহ নয়,
আমাকে চেয়েছিল আমার না-বলা কবিতার জন্য।”
বনলতা চা ঢালছিল ধীরে
তার কণ্ঠে যেন চারুলতার নরম প্রতিবাদ,
সে বলল, “অন্তহীন যাত্রা শেষে শুধু দুই পায়ের শব্দ কানে বাজে।”
রাধা হালকা হেসে বলল,
“আমি কৃষ্ণকে ভালোবেসেছিলাম কিন্তু
সে যে সর্বদা চলে যেতে চায়, তাকে ধরে রাখা মানে নিজেকে হারিয়ে ফেলা।”
দ্রৌপদী একটু ধৈর্যের ছায়ায় বলল,
“পাঁচজন স্বামী থাকলেই নারী শক্তিশালী হয় না,
আত্মার একান্ত স্বাধীনতাই আমার মহাভারত।”
লায়লী জানাল, “মজনুর নামেই ইতিহাস
কিন্তু আমিও তো ছিঁড়ে ফেলেছিলাম একদিন আমার সব কবিতা।”
আর আমি বর্ষার ভেজা বাতাসে খাতা খুলে বলি
“তোমরা প্রত্যেকে ইতিহাসের রক্তিম অধ্যায়
আমি শুধু লিখে রাখি তোমাদের গল্প
অক্ষরের সুরে, শব্দের জাদুতে।”
হাওয়া বয়ে যায়,
বর্ষণের ধ্বনি গাছপালার ঘ্রাণে মিশে
ভিজে যায় ইতিহাস, প্রতিবাদ, প্রেম ও বিদ্রোহের গল্প।
আমাদের আড্ডা থামে না, কারণ
সময় একদিন থেমে গেলেও
এই কথোপকথন রয়ে যাবে এই পাণ্ডুলিপিতে।