মাঠের দক্ষিণ দিকে দাড়িয়ে থাকা হয়
হালকা বাতাস আসে সঙ্গ দিতে
মাথার চুল বাতাসের সাথে আগের মতো আর খেলা করে না
সেরকম চুল নেই,
যেরকম চুল দক্ষিণা হাওয়া পছন্দ করে।
একটা সময় পছন্দ করতো, তখনো মাঠের এ-পাশে
দাড়াতাম, বুকে ওড়না থাকলেও তাদের
চাহনিতে মনেহতো আমি বিবস্ত্র-
আমার নাম ধরে গান ধরতো মাঠের ওপাশের
রাস্তায় বসে থাকা রকমান, ছবের, ভবঘুরে কাশেম-
ওরাও আজ বৃদ্ধ, শুকনো পাতা
ওদের স্থানেও নতুন পত্রের জন্ম।
আজ আমায় - বুড়ি বলেও ডাক দেয় না কেউ
একটা সময় তোফরা নামে কেউ ডাকত না
আমার এ-নাম শুধু কাগজেই ছিল
সুন্দরী নামটাই ডাক নাম হয়েছিল তখন,
এমনকি স্কুলের মধ্যবয়সী স্যারও
ডাকতো সুন্দরী নামেই, সে স্যার
জানতই না আমার নাম তোফরা।
এখন কোন নামই নেই--
এখন নিজেই নিজের নাম দিয়েছি শুকনো পাতা
কাশেম এখনও ভবঘুরে
তবে- গানের গলা নেই
হেঁটে যায় এ-রাস্তায় এখনো
তবে আমার দিকে আড়চোখে আর তাঁকায় না
ওহে সুন্দরী - বলেই আর গান ধরে না।
আমরা সবাই এখন এমন অসুস্থ যে অসুস্থতা
দেখা যায় না, মাপা যায় না, ছোয়া যায় না।
অসুস্থতার মধ্যে যেটা এখন ভয়াবহ
সেটা হলো নিঃসঙ্গতা।
শরীরের চামড়া আর সেরকম নেই
যেরকম থাকলে মানুষ সঙ্গ দিতে আসে।
এখন আর কেউ আড়চোখে তাকায় না
প্রশংসার সুরে কথা বলে না কেউ
এরকমই বোধহয় ধীরগতিতে থেমে যায় নদীর ঢেউ।
পেট থেকে বুক পর্যন্ত
আঙুলের পায়েচারি করে না আর কেউ
কারো ইচ্ছাও জাগে না এ থুরথুরে দেহ দেখে।
একবারও কেউ চুমু খেতে আসে না
গলা অথবা কাঁধে জিহ্বের জল মেখে দেয় না কেউ
এ ঠোঁট এখন থুরথুরে
বুক ঝুলে গেছে
নিতম্ব চেপে গেছে
পেটের চামড়া থুরথুরে
মাইন হারিয়েছে তার ইচ্ছা।
হৃদয়ের সাথে নিঃসঙ্গ হয়েগেছে দেহের প্রতিটা অঙ্গ
যা দেখলে একসময় পুরুষের আচারণ হতো সিংহের মতো।
এখন এ-দেহ থুরথুরে
এ-দেহ শুকনো পাতার ন্যায় পড়ে আছে
আমার স্থানে যে নতুন পত্রের জন্ম হয়েছে
তার উপরে এখন জল ঢালা হয়- কারণ সে সতেজ।