অবহেলিত ।
অত্যাচার অন্যায় অজোছনায় আক্রান্ত ।
শিক্ষা সিংহাসন সদাচারে দন্ড ।
লোভ লাভ চক্ষু লজ্জায় নিমজ্জিত ।
রিকশাওয়ালা,দিনমজুর,কুলি ।
এটা প্রত্যেক মুহূর্তের সমালোচিত ঘটনা ।
প্রত্যেক দিনের অলিখিত অখন্ডিত দুঃখের পরিহাস ।


পেশা ।
ভয়ানক দুর্বিষহ মারান্তক ব্যাধি ।
কষ্ট বেদনা কান্নার অমীমাংসিত স্বপ্ন ।
রোদ বৃষ্টি ঝড় আর প্রবল হাওয়ার সংকটে ।
রিকশাওলার কাহিনী ।
যার সর্বাঙ্গে এই ছাপ লেগে আছে ।
জীবন যেন কষ্টের নাম ।
নাম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বদনাম ।
নিচু জাতির প্রথম শ্রেণীর প্রথম ধাপের মানুষ ।
যার সর্বাঙ্গে কাঁদার স্তূপ ।
দুর্গন্ধের ডাস্টবিন ।


রাত ১০ টা কিংবা ১২ টা ।
২ টাও বাজতে পারে ঘন্টায় ।
সারাদিনের অক্লান্ত পরিশ্রম আর ঘাম জড়ানো ব্যথার শরীর ।
পিপাসা আর হৃদ যন্ত্রণার অবসান ।
তবুও হালকা দেহের শুকিয়ে যাওয়া হাড়ের বুকের মাঝের লুকানো স্বপ্ন গুলি ।
ঘুমন্ত মুহূর্তের সুখের প্রতিচ্ছবি ।
যেন ঘুম ভাংলেই দেখতে পারে সুখের সাম্রাজ্য।


সকাল সকাল ।
৬.১৫ থেকে ৭ টার মধ্যে ।
নিজেকে আরো বেশি কলঙ্কিত মনে হয়।
ওই সময়টার কথা বারবার আরো বেশি চমকে দেয় আমার নিপীড়নের জীবনকে ।
ভাবিয়ে তোলে আমার গরীব হওয়ার সংগ্রামকে।
যে মুহূর্তে দেখি পাশের বাড়ির ছোট্ট ছেলে কাঁধে ব্যাগ, হাতে টিফিন বক্স আর পায়ে সাদা জুতা পরে যাচ্ছে স্কুলে।
খুব ইচ্ছে হয় তখন আমারও যদি হতো এমন ।
কষ্ট গুলো দিতাম পাড়ি রিকশার প্যাডেলে ।
আর দ্যাখেন হায়রে !কপাল।


অন্ধকার হয় দিন ।
ঝাপসা হয়ে যায় চোখ ।
গলা শুকিয়ে যায় তখন ।
যখন ছোট মেয়ে বলে নূপুর চাই পাশের বাড়ির শিউলির মতন ।
বোবা হয়ে তখন থাকি অনেক ক্ষন ।
কিছুটা সময় পর জোরে একটা নিশ্বাস নেই ।
যেন থমকে যায় জীবন ।
অচল হয় দেহ ।নিস্তেজ হয় শরীর ।


এই তো নাটক ।
এই তো নাটকের চরিত্র ।
যার প্রতিটা জীবনেই দুঃখ কষ্টের ছায়া ।
যার প্রধান অংশে বিবেক আর শেষ অংশে অপরিকল্পিত জীবনের চাহিদা ।
মাঝখানে শুধু মরুভূমি আর হতাশায়র চর ।


জীবন তো এটাই ।
কষ্টকে সহ্য করা অবহেলাকে মানিয়ে নেওয়া ।
স্বপ্নকে আঁকড়ে না ধরে আকাশে উড়তে দেওয়া ।
আর নিজের কিছু গোপন ইচ্ছেকে নিমেষেই বিসর্জন দেওয়া ।