খুব অচল অবহেলিত অলস কুসংস্কারে ভরা এই নামটা ।
ভরা ঘাটে বিপর্যয়ের বিস্ফোরণে বিচ্ছিন্ন ওই অশ্রু মাখা ছেলেটা ।
খামখেয়ালি এই সভ্যতার সমাজে সার্বজনীন সর্বদা ধুলোয় মাখামাখি তার মুখটা ।
জ্ঞান বিজ্ঞানের যুগের ছোঁয়ায় মাত্রাতিরিক্ত মাধ্যাকর্ষণের আকর্ষণে ক্ষত বিক্ষত তার দেহটা ।


ময়লার স্তূপ আবর্জনায় ক্লান্ত কাদামাখা সাদা মাটির জায়গাটি ।
নোংরা মাছি পিপড়ার ঘেনঘেনানি টুংটাং টুপটাপ ভিরে খাদ্য কুড়াচ্ছে ছেলেটি ।
ডাস্টবিন বাজে গন্ধে বর্ধিত বাতাসে ব্যাকুল বহমান তখনও একসাথে সেই ছেমড়া আর কুকুরটি ।
ধুলোয় পদদলিত কাগজের টুকরোর ভাঁজে ট্রাকের চিবানো ওই মাংসটি ।


অগোছালো ধুলোয় মাখামাখি মাথার বড় বড় চুলগুলো পড়ে আছে ছিটকে ।
এলোমেলো কূলষিত কাদা কালি আর রং বেরঙের ময়লা যেন রাজ্যের রাজা করেছে ছেমড়াটিকে ।
পোশাক পরিধানে পর্যালোচনার বালাই ঢালাইয়ের অবকাশে লজ্জা তুলে নিয়েছে পথছেলেটিকে ।
কথা কল্পনার ভবিষ্যতে ভাবনার বিষয় গুলির আগ্রাসন থেকে ত্যাগ করেছে এই ছেমড়া নাম টিকে ।


রেলওয়ে স্টেশনের গলিতে গলিতে বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে মোড়ে অর্ধনিমজ্জিত জাতি হয়ে ভাসছে এখানে সেখানে ।
কাঁচা বাজার মার্কেটের ঢোকার সিঁড়িতে মসজিদ আর বস্তির উৎকন্ঠা জীবনের পরতে পরতে এখনও কাঁদছে ।
ধনীর দামি গাড়ির গ্লাসের ছায়ায় হাত বাড়ানো ট্রাফিকের সিগন্যালে জীবন ঝুঁকিতে দৌড়াচ্ছে ।
নামী দামি পোশাকের স্যুট ব্যুটের ব্যাপক তফাতে বড় বড় শ্রেণীর মানুষের প্যান্ট হাত ধরে চাইছে ।


নিজেকে ধর্ষিত মনে হয় ।
ধর্ষকরুপী মানুষের সাথে তাল মিলিয়ে মিলনায়তনে স্বাক্ষ্য দিতে ইচ্ছে হয়।
এ বিবেক আজ কলঙ্কিত নিমজ্জিত সকল কলকারখানার চাকায় ।
নিষ্ক্রিয় আজ দেহের ভিতর লুকিয়ে থাকা মনুষ্যেত্ব, ডেকে থাকা অর্থ লোভী পিপাসায় ।


কপাল !
নিজেকে বিক্রি করে দেব পতিতালয়ে ।
না হয় উলঙ্গপনায় পাগল হয়ে থাকব সারা কাল ।
শাসকের হাতে দেশকে বিক্রি না করে হয়তো থাকবো ঘুমিয়ে ।
না হয়তো ছদ্মবেশে সন্ন্যাসীতে মাতোয়ারা হয়ে ঘুড়ি উড়ব চিরকাল ।


জীবন !
কুড়াল দিয়ে কেটে ফেলবো যৌবন ।
নগ্ন হয়ে বেঁচে থাকার কোন ইচ্ছে নেই ।
মাঝি হয়ে নদী পাহাড়া দেব অনন্ত জীবন ।
শিক্ষার আলো যেখানে মূল্যহীন ,মনুষ্যত্ব নিয়ে জাতি গঠনের পরিকল্পনা নেই ।


মনুষ্যত্ব !
গলায় দরি গামছা কলসি বেঁধে ঝাঁপ দেব কূপে ।
স্বাধীনতা আমার পক্ষে নেই ।
কানে তুলা চোখে পট্টি বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকব চৌরাস্তার মাঝে ।
এত শত দিবস পালনে আমার কোনও আগ্রহ নেই ।


জাতি !
ডুবে ঘুমে ভেসে জল সমুদ্রের তলদেশে নিমজ্জিত এবেলা ও বেলা ।
হাসি তামাশার আসরের অথিতির আপ্যায়নে মদ্যপানে মগ্ন জ্ঞান ওয়ালা ।
উদাসীন হয়ে অপদস্থ দৃষ্টিতে আকাশ প্রানে না চেয়ে ।
এলোমেলো চিন্তাভাবনায় হতভম্ব হতাশায় না পরে ।
চোখগুলো ডুবুরির মতো শঙ্কায় না রেখে ।
সোনা রুপার হাতে হাত বাড়িয়ে দিয়ে জীবন রাখো মেতে ।


সুদিন !
ছেমড়া ভেসে বেড়াবে স্বপ্নে ,হাসি মাখা হালকা ভাতের প্লেটে ।
ছেমড়া ঘুরে দাঁড়াবে জীবন মোড়ে নরম হাতে শক্ত ইট ভাঙতে ।
ছেমড়া এগিয়ে নেবে দেশকে দ্রারিদ্রের থেকে মুক্ত করে দিতে ।
ছেমড়া সাজিয়ে তুলবে সমাজকে সাম্রাজ্যে ,স্বাধীনতাকে ধারন করবে কলিজাতাতে ।


আসুন ,
এগিয়ে আসি পরে থাকা জরাজীর্ণতে ,পরে থাকা পথশিশুদের কল্যাণে ।
পরে থাকা অধূলষিত অনাথ মেধাবী ছেমড়ার জীবনে ,জাতি হিসেবে গড়ে তুলি নতুন জনবলে ।
এগিয়ে আসি পরে থাকা বস্তির নর্দমায় মাখামাখি অবহেলিত শিশুর জীবনে ।
অবহেলিত মুক্ত প্রানের মুক্ত চিন্তাভাবনার শহরগুলিতে নতুন মুখের সন্ধানে ।
বেড়িয়ে আসি সকল ঘুমন্ত মানহানির লজ্জা থেকে ।
বেড়িয়ে আসি অহংকার আর আত্মমর্যাদার পর্দা থেকে ।
হাত বাড়িয়ে দেই দেশ মাতৃকার সন্তানের তরে ।
দেশকে ফিরিয়ে আনি স্বাধীনতার মোড়ে ।