মানছু ,
অগোছালো এলোমেলো অদ্ভুত অপরিষ্কার দেখতে ।
কথা বলা কথার ধরন কথার চাহনি কথার অমিশ্রণে থাকতে ।
অবহেলা অবহেলিত অপ্রয়োজনীয় অপদস্থ নিজেকে রাখতে ।
কারন অকারণ অকাজের অকারুকার্যের মতো সর্বদা নিজেকে সামলাতে ।
তাঁর জুরি ছিল না ।জুরি ছিল না অপ্রয়োজনে কথা বলতে ।
অপ্রয়োজনে এদিক সেদিকে চলতে ।ঘুরে ফিরে সময় কাটাতে ।


মানছু !
সহজ সরল সরলতায় ভরা ।
আশায় অতিরিক্ত অনতিবিলম্বে পাওয়ার স্বপ্নে ঘেরা ।দুষ্টু দুষ্টমিতে দুশমনের সাথে মেলামেশা করা ।
বন্ধু বান্ধব সবাইকে অকারনে জ্বালাতনে ব্যস্ত করা ।
সময় অসময়ে অক্ষনে বন্ধুর সাথে মাস্তিতে দিশেহারা ।
ভাল লাগা ভালোবাসায় সকলকে বিমোহিত করা ।
উপহার গিফট দিয়ে সবাইকে বিশেষ মুহূর্ত স্মরণ করা ।
এটা ছিল নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ তাঁর ।
সত্য নিয়ে কাজ ছিল তাঁর অহংকার ।
ভিত্তিহীন বিষয়ে ছিলনা কারবার ।
সদা ব্যস্ত থাকতো লেখালেখিতে ।
সামনে অগোছালো যা দেখতো তুলে নিতো কলমের কালিতে ।


মানছু !
এভাবেই দিন হতো পার ।
রাত পোহাত জেগে ।
কখনও রুমের জানালায় কখনও বাড়ির ছাদে ।
কখনও বন্ধুদের আড্ডাতে কখনও চায়ের স্টলে ।
কখনও ভার্সিটির ক্যাম্পাসে কখনও অডিটোরিয়ামে ।
কখনও ক্রিকেটের মাঠে আবার কখনও দাবার গুটিতে ।


মানছু !
হঠাৎ একদিন ।
হয়তবা সেদিন শনিবার হবে ।
নয়তো রবিবার ।
ঠিক মনে পরছে না কোনমতে ।
ভাবতে হবে আবার একা নির্জনতে ।
থাক ,পরে থাক এ বিষয় ।
ভাবনার নেই শেষ ।
আগে তো কাহিনী লিখে করি শেষ ।
___!!
সেই দিন একটা কল এসেছিল ।
সময়টা কেন যেন গম্ভীর লাগছিল ।
সব কিছু কেন জানি স্তব্দ ছিল ।
কেন জানি শিহরিত হচ্ছিলাম ।
কেন জানি কেপে উঠছিল লোম ।
যাইহোক ,
শুনতে পেলাম কান্নার শব্দ ।
নাম্বারটিও অপরিচিত ছিল ।
কথা না শুনতেই ওপাশের আওয়াজ হলো স্তব্ধ ।
অনেকবার কে বলছেন ,কাঁদছেন কেন জিজ্ঞাসা করলাম ।
থেমে থেমে হা হুতাশে শুনতে পেলাম ।
করিম !
আমার বন্ধু ।
ওই কল দিয়েছিল ।


মানছু !মানছু !
গলার ভেতরটা আটকে গেল ।
দম নিতে পারছিলাম না মোটেই ।
কেন জানি শরীরটা কাঁপছিল ।
অশ্রু ঝরছে এমনিতেই চোখের কোনেই ।
থমকে গেলাম ।
চমকে গিয়ে লুটে পরলাম মাটিতে ।
কেউ একজন তুলে বসালো কোনমতে ।


মানছু !
ভাবতেই বুকটা ধরপর করে উঠলো ।
ও !
পৃথিবীতে নাই ভাবতেই চোখ গুলো চড়কে উঠলো ।
মনে পরতে লাগলো বন্ধুত্বের কথা ।
বন্দুত্বের নানা দিক ।
কখনও কোন কিছুই দেখতো না ও ঠিক বেঠিক ।
সকলকে নিয়ে মজায় থাকতো সর্বাধিক ।


মানছু !
আর ফিরে পাব না তোরে ।
হারিয়ে ফেলেছি চিরতরে ।
লুকিয়ে থাকবি তবু হৃদয়ে অগোচরে ।
ছায়া হয়ে থাকবি পাশে স্মৃতির ঘরে ।
উল্লাস আমোদে রাখবো তোকে তখনও ঘিরে ।
তুইতো আছিস আমার শার্টের বোতাম হয়ে ।
রঙিন চশমার ঝলকানিতে ।
টেবিলের ছোট সেই ল্যাম্পপোষ্টে ।
মিশে আছিস একসাথে তোলা সাদা ফ্রেমের সেই ছবিতে ।


মানছু !
একটা বছর হয়ে গেল পার ।
হয়ে গেল কত নাটকীয়তা ।
পরে গেল কত জীবনের ঝরাপাতা ।
মুছে গিয়েছে অনেক জীবন ডায়েরির লেখ্যতা ।
ভুলে গিয়েছি শত স্মৃতির কথা বার্তা ।
ফেলে এসেছি বন্ধুত্বের মিত্রতা ।
শুধু ,তোর নামটা এখনও বাজে ।
কল্পনা এখনও তোকে রঙিন সাজে ।
তোর হাসিখুশি এখনও হাসে ।
তোর শ্বাস প্রশ্বাস এখনও মিশ্রিত বাতাসে ।
শুধু ,তুই নেই -একথা ভাবতেই অশ্রু আসে ।


মানছু !
তোকে হারিয়েছি চৌরাস্তার মোড়ে ।
হাজার লোকের ভিরে ।
শত মানুষের গম্ভীর গলার হায় হায় সূরে ।
ট্রাফিকের সেদিনের বাঁশির কড়া শব্দের সূরে ।
টহল পুলিশের ভির ঠেলানো লাঠির বাহাদূরে ।
এম্বুলেন্সের দ্রুত গতিতে আসার শব্দে ।
অপরিচিত মানুষের সাহায্যের বাড়িয়ে দেওয়া হাতে ।


মানছু !
আমরা আজ সেই চৌরাস্তায় ।
যে চৌরাস্তায় এখনও তোর রক্তের গন্ধ রয়েছে ।
যে চৌরাস্তায় এখনও তোর শার্টের বোতাম গুলি পরে রয়েছে ।
যে চৌরাস্তায় এখনও তোর স্বপ্ন গুলো ডাকছে ।
যে চৌরাস্তায় এখনও তোর পায়ের ছাপ গুলো বিরাজ করছে ।


মানছু !
আর যেন না ঘটে এমন অঘটন ।
আর যেন না ঘটে এমন দূর্ঘটনা ।
আমরা শপথ নিয়েছি ,
সড়কপথ রেলপথ জলপথ ।
সকল পথেই থাকব নিরাপদ ।
নেব নতুন কর্মসূচি ।
বাস্তবায়িত করব নিরাপদ সড়কের যোগাযোগের গতি ।
সচেতন হবো নিজে ,সচেতন করব অন্যকে ।
আর প্রতি বছর ফিরে আসবো তোকে নিয়ে এই সাহসী মিছিলে ।