সময়ের আঁচরে পরিবর্তন হয়ে গেছে এর সৌন্দর্য।
পরিবর্তন অনেক হয়েছে।
এককালে অনেকেই চিনতো না বাড়িটা।
তবে,আজ বাড়িটা ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে দাড়িয়েছে।
বাড়িটা দৌলতপুরের খাঁ মঞ্জিল।
যেখানে অথিতি হয়েছিল আমাদের কবি নজরুল।
তিনি এখানে এসেছিলেন।
জয় করে নিয়েছিলেন এক নারীর মন।
শেষবারের মত ফিরেও গিয়েছিল।
আর কখনো আসি নি।
সৃষ্টি করেছে শুধু কিছু কাহিনী।


দৌলতপুরের মুরাদনগর অনেকেরই জানা।
কেউ বা শুনেছে এই গ্রামের কথা।
দৌলতপুর স্থান নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়।
১৯২১,এপ্রিল মাসে সেঁজেছিল এই গ্রাম কবির পায়ের ছাপে।
মাত্র আড়াই মাস। এই অল্প সময়ের স্মৃতি তিনি যেমন ভোলেনি ,ভোলেনি গ্রামের মানুষেরা।
ভোলেনি কবি ভক্তের হৃদয়।
তাইতো মুরাদনগরে বারবার যেতে ইচ্ছে হয়।


প্রকাশক আকবর আলীর আহবানে।
কবি পাড়ি দিয়েছিলেন দৌলতপুরে।
হাতে ছিল অখন্ড অবসর।
ভবঘুরে স্বভাবটাতো ছিলই তার।
যাত্রা বিরতি করেছিল কুমিল্লায়।
উঠেছিল আলী আকবরের বন্দু বীরেন্দ্র কুমার সেনগুপ্তের বাড়ির আঙ্গিনায়।


কবি যেখানেই গিয়েছিল। সেখানকার মানুষকে আপন করে নিয়েছিল।
মা বলে ডেকেছিল এখতারুন্নেসাকে।
তিনিও গ্রহন করেছিল পুত্র ¯েœহে।
বুকটা তার ভরে গিয়েছিল এমন ডাকে।
সন্তান ছিল না যে তার আগে।


খাঁ বাড়িতে দিনগুলো কবির ভালই কেটেছিল।
পুকুরে সাতার কাটা আর গান গাওয়া।
আম গাছের নিচে বাঁশি বাজানো, পুকুরপাড়ে গানের আসর জমানো।
বাড়ির ছোট ছেলে-মেয়েদের হইহুল্লরে মাতানো।
এগুলো কবির সময় কাটানোর সহজ পন্থা ছিল।


বাড়ির কয়েকটা মেয়েকে দেখিয়েছিল আলী আকবর।
কবির পছন্দ হয়নি বিয়ে করার।
প্রচুর আগ্রহ ছিল আকবরের।
কিছুই করার ছিলনা।
কবি তখনো এটা ভাবতো না।


আম্বিয়া খানম , মুন্সি আব্দুলের বিয়েতে।
মনটা হারিয়েছির কবি নিজে থেকে।
দেখেছিল কবি সৈয়দা খানমকে।
প্রথম দেখাতেই ভাল লাগে নজরুলের চোখে।
সৈয়দাও পছন্দ করেছিল ঝাকড়া চুল , সুঠাম নজরুলকে।


তাঁদের পরিছয়ের সূত্রপাতে।
গত রাতে আপনি কি বাশিঁ বাজিয়েছিলেন ? শুনেছি আমি।
এটা কবির সুহৃদ , অভিভাবক কমরেড মুজফ্ফর এর মতে।
এভাবেই প্রেম গড়াল।
নজরুল সৈয়দার নতুন নাম দিল।
কবি বলেছিল-এমন ফুলের মত যার সৌন্দর্য। তার এই নাম কে রেখেছে ?
আজ থেকে তোমার নাম নার্গিস।
এটা কিন্তু পাল্টে সৈয়দা থেকে নয়।
সৈয়দার ডাক নাম দুবি বা দুবরাজ থেকে এর পরিবর্তন হয়।
নার্গিস নামটি স্থায়ী হল সৈয়দার জীবনে।
এই নামটিই জায়গা নিল কবির কবিতা আর গানে।


১৯২১ সালের ১৭ জুন বিয়ের তারিখ তারিখ ধার্য হয়।
সাতদিন আগেই খাঁ বাড়িতে উংসবের আনন্দ জমায়।
বিয়েতে এসেছিল আন্তীয় স্বজন।
জমিদার রায়বাহাদুর আরও গন্যমান্য জন।
আলী আকবরের বন্দু বীরেন্দ্রের মা গিরিবালা আরো পরিবার স্বজন।


কোন এক কারনে। আকবরের মতান্তর হয় কবির সঙ্গে।
কেউ বলে দেনমোহর পচিঁশ হাজার টাকা।
কেউ বলে কুমিল্লায় স্থায়ী ভাবে থাকা।
এমনই এক শর্ত।
কবি নজরুল হয়েছিল ক্ষিপ্ত।


বিদায় নিয়েছিল কবি বিয়ের রাত শেষ হওয়ার আগে।
ক্রদনরত নববধূকে বলেছিল, শ্রাবন মাসে তুলে নিয়ে যাবে তাকে।
এরপর বারবার শ্রাবন আসে যায়।
কবি নজরুলের ফিরে না আসা হয়।
দুই মাসের প্রেম এক দিনের পরিণয়।
১৭ বছর রাত কেটেছে এমনই অপেক্ষায়।


১৭ বছর পর নার্গিসের ২য় বিবাহ হয়।
১৯৩৮ সালের ১২ ডিসেম্বর।
নতুন জীবন শুরু করে নার্গিস আবার।


একথা কবি যখন শুনলেন,
-পথ চলিতে যদি চকি কভু দেখা হয় পরান প্রিয়।
এই গানটি লিখে পাঠালেন।
সাথে ছিল চিরকুট।
লেখা ছিল-
জীবনে তোমাকে পেয়ে হারালাম , তাই মরনে পাব এই বিশ্বাস ও স্বান্তনা নিয়ে বেঁচে থাকব।
কবির বিশ্বাসটা আছে মনে হয় অটুট।