আজ হেঁটে এসেছি যমুনার পথ ধরে ।
মেঠো পথের সূর ধরে ।
আঁকাবাঁকা দড়ির হাত ধরে ।
সবুজ শ্যামল রথ ধরে ।


এখনও ভাসি জোৎস্নার খেয়া জালে ।
এখনও নিজেকে হারাই নৌকার মাধূলিতে ।
এখনও ডুবি ভাসি যমুনার বানে ।
এখনও জমে আছি খেজুর রসে ।


এখনও স্বপ্ন দেখি চিলেকোঠায় ।
এখনও জ্ঞান হারাই মায়ের পিঠায় ।
এখনও তৃপ্তি খুঁজি ছোট ছোট চুরির ঘটনায় ।
এখনও প্রান খুঁজে চলি গ্রামীণ মেলায় ।


এখনও মগ্ন হয়ে কান পেতে শুনি রাখালের বাঁশি ।
এখনও আনন্দ আটখানায় দেখি মাঝি মল্লার হাসি ।
এখনও দেখি সবুজের আঙিনায় সূর্যের শত শত রাশি ।
এখনও দেখি গান গায় লাল বয়াতির ডুগডুগি সুতোর ফাঁসি।


এখনও দেখি সন্ধ্যা নামে গৃহবধূর সংসারি কাজে ।
এখনও দেখি খরস্রোতেও নতুন বধূ সাজে ।
এখনও দেখি কালো টিপে কারো নয়ন লাজে ।
এখনও দেখি ঘোমটায় মাঝে লুকিয়ে কেউ খই বাজে ।


এখনও খুঁজে পাই জোৎস্না রাতের দাদির গল্পের বুড়ি ।
এখনও খুঁজে পাই খুব প্রভাতে দাদুর হাতে খেজুর হাড়ি ।
এখনও খুঁজে পাই বাবার লাঙল চরানো বাঁশ কুন্চীর বারি ।
এখনও খুঁজে পায় গভীর নদীতে জেলের মাছ ধরার বাহাদুরি ।


এখনও ফিরে পাই সেই গাংচিল ঘুড়ির নেশার জব্দ ।
এখনও ফিরে পাই গোল্লাছুট আর বৌ চোরের খেলার শব্দ ।
এখনও ফিরে পাই ডাংগুলি আর গুঁটি খেলার ভালমন্দ ।
এখনও ফিরে পাই হইহই করে পুকুরে লাফানো এলোমেলো গন্ধ ।


এখনও ভাসে স্মৃতির খাতায় চাঁদের বুড়ির গল্প ।
এখনও ভাসে স্মৃতির পাতায় বিমান হওয়ার স্বপ্ন ।
এখনও ভাসে স্মৃতির ছোঁয়ায় মোটরগাড়ির পিছনে হাত তালির রত্ন ।
এখনও ভাসে স্মৃতির আঁকায় ধুলো মাখা গড়াগড়ির ছন্দ ।


এখনও ইচ্ছে করে ঘুরে আসি ফেলে আসা দিনগুলিতে ।
এখনও ইচ্ছে করে ছুটে আসি ফেলে আসা শৈশবে ।এখনও ইচ্ছে করে মিশে থাকি গাঁয়ের আদরের চাদরে ।
এখনও ইচ্ছে করে আবার ফিরি জোৎস্নাস্নানে স্বপ্নের আঁতুড়ঘরে।