অমাবস্যার রাত,গাঢ় তমসা শূণ্যছাত,যেতেছে কেঁটে-
নিদ নাই চোখে,অভাবের শোকে,তবু মরি এত খেটে।
ভরে এক ঝুড়ি,দাতে পিষিতেছি মূড়ি,মধ্য নিশিথে আসি-
শ-শ বায়ূ আর নিশিথের আয়ূ ক্রমে হতেছে বাসি।
মাচানের পর,জড়ায়ে ধানের খড়,বসিয়া বসিয়া ঝিমাই-
পরদিন পুনঃ,জটিল অংক গুণো,কে কত টাকা পায়!
বধু একা ঘরে,গহীন নিদ্রাঘোরে,নাকে বাজিতেছে বাঁশি
ঐপারে গাভী,মহিষের দাবি,ঘনঘন ডাকিতেছে খাঁসি।
নিয়া একহাত দন্ড,খাঁসির পিঠেতে খন্ড,করিনু গিয়া-
সজোর চিৎকারে তার,মমতা আসিলো আবার,
কাঁপিলো হিয়া।
তারপর আসি,আমি হুতাশী,মাঁচানের পর কাৎ-
জটিল নিদ্রাঘোর,তিমির অম্বর,মোর চুকিলো চিন্তা ধাত!
খানিক পরে হায়,পরশ পাইনু গাঁয়,বুলাইছে কেহ হাত-
মূখে পরিতেছে চুল,বাজিতেছে দুল,জাগিনু তারি সাথ।
উঠিয়া দেখিনু চাহি,কেহ মৃদু গান গাহি,ছুয়েছে বাটীর দ্বার-
দ্বারের কিনারায়,বাহুর ইশারায়,ডাকিতেছে বারবার।
“কে তুমি মেয়ে?সুন্দর গান গেয়ে,ডাকিতেছো মোরে?”
“ডাকিয়াছো যবে শিয়র হইতে তবে কেন যাও সোড়ে?”
খানিক স্তব্ধ থাকি,মোরে মোহে রাখি,বারাইলো তাহার হস্ত-
ধরিতে তাহারে চাই,হইলো না উপায়,আলোর
অধীনস্থ।
আলো ধরিতে গেলে,যেমতে ফস্কে চলে,তাহার হইল তাই-
“ভীতসন্ত্রস্ত হই,আমি পাপী নই,মোর ক্ষতি করিওনা ভাই।”
“ভাই!এই ডাক নাহি চাই,শুধু প্রেয়সী বলিবে আসি
বলিবে হে পাত্র,মোরে দিবারাত্র,ভালোবাসি ভালোবাসি!”
এ কী যে মুছিবৎ,আধার আক্ষিপথ,মূর্ছা চলিনু শেষে
কতক্ষন যে হায়,আপনার খোজ নাই,কোথা গেনু ফেসে।
আন্দাজ ঘন্টা চার,মূর্ছা কাটিলো আমার,খুলিনু আখি-
এক অদ্ভুত নারী,জড়াইয়া রাঙা শাড়ি,মোরে কক্ষে দিয়াছে রাখি।
এ তো পেতনি জাত!নাভি ছোয়া দাত,পাঁ ছোয়া চুল-
গাঁ ছোয়া লহু,গন্ধ বহু,হাঁস্য দোদুল।
আসিতেছে আগি,সর-সর অভাগী,লাগে মোর ডর-
গাঁয়ে হানে বল্লম,শিহরে উঠিছে লোম,কষিয়া মারিবো চড়।
হায় কী বলিনু শেষে,যাইব কী ফেঁসে,মাফ করে দাও।
আমি পথ হারা,পাইলে ছাঁড়া,দিব তুমি যাহা চাও।
দিল কথা হাস্য করিয়া বাদ,ওরে উন্মাদ,নাই তোর কিছু-
যদি সকালে থাকে ভাত,কাটেনা রাত,নিস অন্য লোকের পিছু।
সেই তুই নাকি তাই,আমি যাহা চাই,দিবি সর্ব ঢালি
তোর কথা রহিল পিছে,আমি ছাড়িব মিছে,তুই যাইবি পালি।
“আমি দরিদ্রময়,তব অজানা নয়,তবে কেন করিলে বদ্ধ?”
ঐ দুলালেরা যারা,নেয় নারী ভাড়া,মত্ততা মদে আবদ্ধ।”
তারে গিয়া ধরো,বহু অর্জন করো,আমাতে তোমাতে কী?
ধরি দুই পা মোর,জোর খাটাও জোর,আমি যাইব বেকি!
তুমি দেখিতে অদ্ভুত,তুমি পেতনি ভুত,হাত জোর করি-
কিঞ্চিৎ লাভ নাই,মোরে ধরে তাই,ছাড়ো যাই আমি সরি।
গরিব বলিয়া কী,প্রেম নাই নাকি?মোরে দিওনা ধোকা-
প্রেতের বাক্য শুনি,মনে মনে বুনি,মোরে করিতেছে বোকা।
আমি বোকা নই,আর বোকা নাহি হই,তোমার বাক্য শুনে-
পেত্নি ভালোবাসিব,তার নিকট আসিব,সবে কী আনিবে মনে?
কে কী আনিবে,মানিবে,তাহাতে তোমার কী?
সূচনে মোরে হেরি,ভাঙেনাই বক্ষবেড়ি,প্রেম জাগেনি কী?
সূচনে তোমার রুপ,অমৃত অপরুপ,এখন যাহা দেখিতে পাই-
ছিল তৃষ্ণা যত,হয়েছে সর্বক্ষত,মোর কোনো আহ্লাদ নাই।
ভালোবাসিলেনা তাই,তবে ঘাড় মটকাই,পালাবে কখন?
বধু আছে মোর,করি হাত জোর,হত্যা করোনা এখন।
অনুমতি নিয়া,আসিব ঘুরিয়া,বধুকে বলিব সব
পেত্নি প্রেমিকা মোরে,করিয়াছে ধরে,প্রেম প্রেম কলরব।
কেমনে জানি হঠাৎ,মাথায় হানিলো আঘাত,উঠিনু হুলুস্থুল।
দেখিনু মাঁচানে চড়ি,বধু রহিছে ধরি,মোর এক মুঠো চুল।
ছাড়ো ছাড়ো বলি,ওরে ফুলকলি,স্বপন দেখিয়াছি ক্ষণ-
“ওরে ছারিবনা চন্দ্রবোড়া,যেন চরিত্র পুষ্পতোরা,
স্বপনেও নারী সর্বক্ষন!”
বলিব কী প্রিয়া,বিশ্বাস রুচিবে কী হিয়া,স্বপনে পেত্নি প্রেম।
পেত্নি বাস্তবে আসি,সে যে স্বপন বিশ্বাসী,যদিও স্বপ্ন চুকিয়ে এলেম।