কাসেম মিয়া দাড়ি মুখে -
বলছে সে তাঁর নিজের ভিটে,
একই গাছের দুইটি কাঁঠাল আনছে হাটে।
ক্রেতারা সব কাঁঠাল দেখে বলছে তাকে,
কাঁঠালের দামটা কত ?
ও চাচা - কাঁঠাল ভালো হবে নাকি ?
আরে - বলেন কি?
কাঁঠাল ভালো হবে  - ভাঙবো নাকি?
না চাচা - দাড়ি মুখে বললেই হবে,
আপনি কোন ধরনের কাঁঠাল খুঁজছেন?
একটু যদি বলেন।


কাঁঠাল খুঁজছি মিষ্টি রসের গালা কোয়া,
কি চমৎকার মিলে গেছে আপনার চাওয়া!
চাচা ঠিক বলেছেন?
জ্বি চাচা - ঠিক বলেছি,
দেখেন না মোর দাড়ি মুখে বলছি হাছা।
কাঁঠালের দামটা কত?
কাঁঠাল ভালো দামটা বেশি,
মিষ্টি রসের হলদে আভা বড় কোয়া হবেন খুশি ।
চাচার মুখের কথা শুনে কিনছে কাঁঠাল খুশিমনে,
আরেক ক্রেতা কাঁঠাল দেখে আসছে এগে,
বলছে চাচা তাকে দেখে,
কি কাকা - কাঁঠাল কিনবেন ?
একই গাছের একটি কাঁঠাল বিক্রি করছি একটু আগে।
জ্বি চাচা কিনব কাঁঠাল ।
তো - কাঁঠাল কেমন ?
কাঁঠাল শিকমারা না গাছপাকা ?
আরে কাকা - গাছপাকা।
তো - কেমন কাঁঠাল কিনবেন তা শুনি?
হলুদ বর্ণের মিষ্টি রসের বড় বড় চালা ওয়া,
এ কাঁঠাল তো সেই কাঁঠাল যেমন আপনার হচ্ছে কওয়া।


ঘন্টাখানেক পরে কাঁঠাল ফিরে আনছে দুই ক্রেতা,
সাদা বর্ণের কোয়া সবি মিষ্টি তো নয় নোনতা তিতা।
গাছেপাকা রসে ভরা মিষ্টি কাঁঠাল বলছে চাচা,
গাছপাকা নয় শিকমারা সব ভেতর পঁচা।
ভাগ্য ভালো ওই চাচারে পাওয়া গেল কিনছে ঝাটা,
ভাঙ্গা কাঁঠাল দেখে চাচা দিচ্ছে এবার জোরসে হাঁটা ।
অমনি একজন দৌড়ে গিয়ে ধরল টেনে -
কোথা যাস রে বেটা।


হাটের লোকে দেখছে তাকে,
বলছে আবার আরেক লোকে।
চাচার থেকে কালকে আমি তরমুজ কিনছি মস্ত বড়,
তরমুজ খানা খুবই খারাপ আনবো চাচা দেখতে পারো ।
লালচে নয় মিষ্টি নয় ভেতরটা ভাই খুবই কাঁচা,
একের তরমুজ টকটকে লাল মিষ্টি হবে বলছে চাচা।
বাড়িতে নিয়ে কেটে দেখি ভেতর সাদা,
তাই নাকি ভাই ,এ তো দেখি হারামজাদা ।


হাটের মাঝে হাটের লোকে বলছে লোকে নানান  কথা,
পঁচা কাঁঠাল দে ফাটায়ে চাচার মাথা।
কেউ বলেছে চাচার হাতের ঝাটা  নিয়ে -
চাচারে মার ঝাটার বাড়ি,
কেউ বলেছে চাচার মুখে দেখছো কেমন ছাগলদাড়ি।


এমন করে লোক ঠকাবে যায় না মানা,
হাট শালিশে্ রায় হয়েছে জরিমানা।
কাঁঠাল বদল কাঁঠাল দেবে,
নইলে চাচার এই হাটে আসতে  মানা ।
এবার চাচার কাঁধ বগলে কাঁপছে ছাতা,
মুখ ফ্যাকাশে ঘামছে শরীর ভিজছে তাঁর চোখের পাতা।
চোগলখোরী বাটপারি লোক ঠকানো মিথ্যা কথা,
করজোড়ে নিচ্ছে ক্ষমা নত মাথা।
পান মুখে ঢোক গিলে বলছে চাচা চটপটে,
এমন কাজ আর করবে না এই হাটে।