কালো গাইয়ের একটি বাছুর
সবে পাঁচটি মাস,
খড়কুটো তো খায়না কিছু
খায়না কোনো ঘাস।
মায়ের বাটের দুধ খায় শুধু
লেজটি নাড়ায় বেশ,
কালো গাইটি আদর করে
চাটে তার কেশ।


এমনি করে মা-বাছুরের
দিন চলে যায় সুখে,
হাম্বা করে ডাকে মাকে
চোখে চোখে রাখে।
মায়ের বাটের দুধ খায় সে
উদর ভরতি করে,
গরুর মালিক তাই দেখে
রাখতো বেঁধে খোঁয়াড়ে।


মাঝে মধ্যে রাখতো বেঁধে
একটু আড়াল করে,
মা-বাছুর হাম্বা- হাম্বা
ডাকতো জোরে জোরে।
গলার রশি ঝ‍্যাংটা মেরে
ভাংতে চায় খুঁটি,
মায়ের আদর বড় আদর
সন্তানের ওই মুখটি।


হঠাৎ একদিন দেখলো বাছুর
লোকের অনেক ভিড় ,
গরুর মালিক আছে সাথে
হল্লা অথিতির।
চার পা মায়ের বাঁধছে রশি
টানছে সবে জোরে,
মা গোঙানি করছে শুধু
চোখের পানি ছেড়ে।


কালো গাইটি ছটফট করে
লাল বাছুরের জন্য,
একনজর দেখবে তারে
হচ্ছে এবার হন‍্য।
হাম্বা করে উঠলো কেঁদে
দিচ্ছে জোরে ঝাঁকি,
হাম্বা শুনে লাল বাছুরটি
করছে ডাকাডাকি।


লাল বাছুরটি হাম্বা করে
আসলো ছুটে তেড়ে,
মা গরুটি শেষ দেখাটি
দেখছে নয়ন ভরে।
লাল বাছুরটি মায়ের মুখে
রাখছে এবার মুখ,
কালো গাইয়ের চোখ ছলছল
তবুও দৃষ্টিসুখ।


আল্লাহু আকবার বলে মোল্লা
হাটছে জোরে জোরে ,
ছুরিখানি মোল্লার হাতে
ধরছে উঁচু করে।
মোল্লার হাতের ছুরিখানি
অনেক অনেক ধার,
মোল্লা সাহেব চিৎকার করে
আল্লাহু আকবার।


মোল্লা সাহেব বলছে হেসে
লাল বাছুরের গাই,
লাল বাছুরটি নেও সরিয়ে
সময় আমার নাই।
কেউবা টানে পায়ের রশি
কেউবা টানে কল্লা,
আনন্দে সব ধরছে টেনে
ছুরি চালায় মোল্লা।


মায়ের গলায় রক্তের ধারা
বাছুর দেখতে পায়,
ওলান বাটে মুখের গুতা
মাকে উঠাতে চায়।
গরুর ভাষা গরু বোঝে
মানুষ কি বুঝতে পারে?
লাল বাছুরে চোখে জল
ঝরঝর করে পড়ে।


মায়ের জন্য চোখে পানি
পড়ছে বেয়ে বেয়ে,
কে আছে তার চোখের ভাষা
বুঝবে হৃদয় দিয়ে।
লাল বাছুরের গাই দেখো
দিচ্ছে জোরে ঝাঁকুনি,
মোল্লা খুশি বলছে হেসে
সুন্দর হইছে কোরবানি।