একদিন নিজস্বতা খুলে রেখে
আমার ছায়াও ফিরিয়ে নেবে পৃথিবী —
তবু কোনো রক্তচাপবিহীন বিকেলের দেয়ালে
দাগ রেখে যাবে একটি অনুচ্চারিত সম্ভাবনা,
যার মানে হয়তো ছিল না, তবু থাকতো!

ঘুমহীন শহরের নষ্ট ঘড়িগুলোর মধ্যে
আমার নামটা হয়তো বেজে উঠবে—
এক ধরনের বোধহীন আর্তনাদে,
যার শব্দতরঙ্গে অপ্রকাশের সংলাপ ধরা পড়ে।

দেখো, সময়ের ফটোকপি ভুল করে রেখে যাবে
এক পৃষ্ঠা মিথ্যে ভুলে-যাওয়া,
যেখানে আমার অস্তিত্ব থাকবে—
না থাকা হয়ে, অথচ না-ভোলার মতো জেদি।

আমার অস্তিত্ব হবে না মুখস্থ ইতিহাস,
হবে না নামের অভিধানে—
হবে হয়তো সমস্ত না-বলা কথার
বর্ণানুক্রমিক শূন্যস্থান।

ভাবো তো, যদি একদিন
হাওয়ার আত্মহত্যার দিনলিপি প্রকাশ পায়—
তাতে কি পাওয়া যাবে আমার জীবনের ছাপা অস্পষ্টতা?

তখন মেঘের মেজাজে লেখা চিঠি খুলে
কারো চশমায় ঝাপসা হয়ে যাবে স্মৃতির প্রান্তর,
আর একাকীত্বের আঙুলে থাকবে নিঃশব্দের ফোস্কা।

আমি তখন থাকবো—একটা পরিত্যক্ত গানের মতো,
যার তালে নাচে না কেউ, তবু শব্দগুলো বুকে কাঁপে—
হৃদয়ের অন্ধকার ঘরে আলো না জ্বেলে কাঁপা কাঁপা বাতাসে।

আমি নিজেই বুঝি না—
আমি কি নিজের অনুপস্থিতির ফসিল হতে চেয়েছিলাম?
নাকি স্মৃতির ছাইগন্ধ নিয়ে বসে থাকা
এক মায়াময় ভুল বোঝাবুঝি?

তবু কোনো এক দুর্ভেদ্য মধ্যরাতে
যদি হঠাৎ গাছেরা কথা বলে ওঠে,
পাঁজরে মেঘ ফেটে বলে—
"কিছু একটা ছিল... ঠিক মনে পড়ছে না, তবু বুক ভার..."

তখন জেনো—
আমার অরূপ বিদায়পত্র ছিল সেই অনুভবের উপশিরোনাম,
যা কোনোদিন পাঠ হয়নি, তবু পড়ে ফেলা হয়েছিল
নির্বাক কান্নার ভাষায়।