একাকী নদীর বুকেও স্বপ্ন জাগে---
সে কেবল প্রবাহিত হয়, ভাঙে তীর, গড়ে তট---
তার বুকে জোয়ারের উল্লাস, ভাটার বিষাদ,
তবুও সে নিঃশব্দ, নিরব, অনবদ্য এক মহাকাব্য।
পুরুষ—সে কি শুধুই এক সার্থকতার ছদ্মবেশ?
তার শিরায় শিরায় প্রবাহিত হয় সংগ্রামের রক্ত,
সে পাথরের বুক চিরে পথ গড়ে,
সে বজ্রের কণ্ঠে উচ্চারণ করে প্রতিজ্ঞার মহাসংগীত।
তার প্রেম কি কেবলই যোগ্যতার মাপকাঠিতে?
সফলতার সোনার মুদ্রায় কি ভালোবাসার দাম লেখা?
তার ক্লান্ত হাতে যে রাত্রির স্তব্ধতা নেমে আসে,
তার বিষাদঘন আঁধারে কি কেউ আলোর প্রদীপ রাখে?
সে ভাঙে, গড়ে, নিঃশেষে বিলিয়ে দেয় নিজেকে,
তার স্বপ্নের শহর জ্বলে ওঠে অন্যের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ,
তার হাতের রেখা বয়ে যায় সমুদ্রের গহীনে,
তবু কি সে এক ফোঁটা জল পায় তৃষ্ণা মেটানোর?
পুরুষের ব্যথা নদীর স্রোতে মিশে যায়,
তার কান্না বাতাসে উড়ে যায় বালির মতো,
তার অস্তিত্ব এক তপ্ত মরীচিকা—
যার দিকে সবাই দৌড়ায়, ছুঁতে চায়,
কিন্তু ছুঁয়ে ফেললেই ভুলে যায় তার জ্বালা।
তবু সে একা দাঁড়িয়ে থাকে—
অভিমানী সূর্যের মতো দিগন্তের কিনারে,
অন্ধকারে জ্বলে ওঠে নিঃশব্দ প্রদীপ হয়ে,
কেউ ভালোবাসুক বা না বাসুক,
সে নিজের অস্তিত্বের ভিত গড়ে তোলে নিজেই।