জ্যোৎস্না স্নাত, মেঘমুক্ত শারদীয় পূর্ণিমার রাতি;
এ আলোয় ম্লান আজিকা, বন্দরের বিজলী বাতি।
দীঘির জলে জ্যোৎস্না, খেলছে ঝিলিমিলি খেলা;
শান বাঁধানো দীঘির ঘাটে, বসে আমি একালা।


অদূরে বাঁশ বনে, জ্যোৎস্না ফেলেছে মায়াবী ছায়া;
বাঁশগুলো জড়াজড়ি করছে, নিয়ে সুগভীর মায়া।
দূর বনে শিয়াল দল, করছে রাতের প্রহর ঘোষণা;
নিঃস্তব্ধতা ভেঙ্গে রাতের পাখি, করছে আনাগোনা।


হঠাৎ আপাদমস্তক করে আবৃত, শ্বেতশুভ্র বসনে;
রমনী মূর্তি এক, আসছে ধীর পদে, এ দিক পানে।
ক্ষণকাল ভাবি, এটা কি অশরীরি আত্মা; না পরী;
তাকিয়ে উল্লাসী উঠিলাম, এ যে আমার প্রাণেশ্বরী।


ঘাটে বসে আছি দু'জন, নিরব-নিস্তব্ধ চারিধার;
শেফালী, হাসনাহেনা, রজনীগন্ধার গন্ধে মুখর।
জ্যোৎস্না পরছে গলে, তার কপাল বয়ে চিবুকে;
নিস্তব্ধতা ভাংগার ভয়ে, তারে জড়ালাম না বুকে।


হঠাৎ একটা মাছ, দীঘির জলে মাথা উঁচু করে;
আলোরিত জলে, চাঁদের প্রতিবিম্ব ভেঙ্গে পরে।
এক খন্ড সাদা মেঘ, ক্ষণকাল ঢেকে দেয় চাঁদ;
মেঘখন্ডকে আজিকা মনে হলো, একটা আপদ।


পাকা রাস্তায় একটা জীপগাড়ি, তীর বেগে ছুটছে;
লক্ষ্মী পেঁচা তাই দেখে, বারে বার ডেকে উঠেছে।
মাঠের সবুজ ধান ক্ষেত, দখিনা হাওয়ায় নাচছে;
বাদুড় খাবার সন্ধানে, এদিক সেদিক উড়ে যাচ্ছে।


এমন মায়াময় পরিবেশ ছেড়ে যেতে, চায়না মন;
ইচ্ছে করে, হাতে রেখে হাত, বসে রই সারাজীবন।
ধ্যান ভাঙ্গে, প্রাণেশ্বরী নীলাঞ্জনার মায়া ভরা গানে;
সুর ধরে, 'আজ জ্যোৎস্না রাতে সবাই গেছে বনে'।
        তারিখঃ ০৯-১০-২০২২ ইং;