ভ্রুণ থেকে দিয়েছ আমায় পূর্ণ মানব জীবন;
৪০ সপ্তাহ, মানে ২৮০ দিন জঠরে করেছ ধারণ।
জোঁকের মত নিয়েছি শুষে তব দেহের রক্ত;
তবু সদা রয়েছ হাস্যোজ্জ্বল, হওনিকো বিরক্ত।
ক্ষণে ক্ষণে তব দেহ মাঝে করেছি আঘাত;
সহাস্যে বলেছ 'দুষ্টু শোনা', করোনি প্রতিঘাত।
শীর্ণ দেহ নাহি চলে; তবু ঠোঁটে হাসির মহিমা;
তুমিই আমার জন্ম দায়নি; মোর স্নেহময়ী 'মা'।


অসহায় শিশু কেঁদে উঠে; এসে এ বিরূপ ধরায়;
তোমারি কোলে  মিলে তার ভয় হীন আশ্রয়।
তোমার বুকের সুমিষ্ট সুধা, মিঠায় তার ক্ষুধা,
দেয় তৃষ্ণার জল, রোগের ঔষধ, এটা অমৃত সুধা।
পৌষের রাতে ভিজা বিছানায় পাঁজর তব ভিজে;
আর সন্তান থাকে আরামে, তোমার বক্ষ মাঝে।
সন্তানের শুশ্রূষায় জেগে কাটাও রাত, অন্যতমা;
তুমিই আমার জন্ম দায়নি; মোর স্নেহময়ী 'মা'।


তুমি খেয়েছ ভাতের ফেন, '৭৪-এর দূর্ভিক্ষ কালে;
উপোস থেকে নিজে, সন্তানেরে দিয়েছ অন্ন তুলে।
আড়াল হলে সন্তান, চোখের জলে ভাসাও বুক;
নিজে পরে চীরবাস; তারে দাও নতুন পোশাক।
সন্তানের সাফল্য তুমি হাস বিজয়িনীর হাসি;
তার সুখেই তুমি মনের আনন্দে বাজাও বাঁশি।
তাইতো সাদা-কালো সবার কাছেই তুমি উপমা;
তুমিই আমার জন্ম দায়নি; মোর স্নেহময়ী 'মা'।


বৃদ্ধ বয়সে তুমি সজ্জাগত, চলত্‍শক্তি হারিয়ে;
পাওনা দু'মুঠো ভাত; দেয় না সে হাত বাড়িয়ে।
সন্তান থাকে অভিজাত এলাকায় প্রাসাদ 'পরে;
তুমি থাক বৃদ্ধাশ্রম বা সুদূর গাঁয়ের কুঁড়েঘরে।
তোমার খোঁজ নেবার এতটুকু সময় তার হয়না;
তবু দেখ সেই চাঁদ মুখ, খুললে মনের আয়না।  
শাপ নয়, কর সদা দোয়া; তাইতো তুমি নিরুপমা;
তুমিই আমার জন্ম দায়নি; মোর স্নেহময়ী 'মা'।
২৬.০৭.২০২২
--------------::::::::::::::-------------