স্বাধীনতার দাম রক্তে লেখা,
ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে আছে সে দিন।
সেদিন এক জাতি বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়েছিল,
বলেছিল—আমরা মুক্তি চাই, আমরা স্বাধীনতা চাই।
এলো বিজয়, এলো নতুন সূর্যোদয়।
কিন্তু সূর্যের আলো পৌঁছায়নি আজও ঘরে।
আমি দেখেছি স্বাধীনতা, পতাকায় উড়তে।
কিন্তু পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে থাকা
মানুষের চোখে আজও দেখি শূন্যতা।
স্বাধীন দেশের কৃষক তার ফসল ফলায়,
অথচ তার ঘরে খাবার থাকে না।
এ কেমন স্বাধীনতা?
স্বাধীনতা মানে কি শুধু জাতীয় সংগীত গাওয়া?
স্বাধীনতা মানে কি কেবল ভাষণে বীর শহীদদের স্মরণ করা?
যদি তাই হয়, তবে সেই স্বাধীনতা আমি পাইনি।
আমরা পেয়েছি মানচিত্র, পেয়েছি পতাকা,
কিন্তু মুক্তির স্বাদ পাইনি।
এখনও বিচার চাইতে গেলে রক্ত ঝরে।
এখনও সত্য বলতে গেলে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
যে দেশটি যুদ্ধ করেছিল শোষণের বিরুদ্ধে,
সে দেশেই আজ দুর্নীতির বিষবৃক্ষ বড় হয়ে উঠেছে।
রাতের আঁধারে গুম হয়ে যায় প্রতিবাদী কণ্ঠ,
আদালতের বারান্দায় ন্যায়বিচার অপেক্ষার প্রহর গোনে।
আমি এমন স্বাধীনতা চাইনি,
যেখানে মানুষ এখনো ক্ষুধার্ত।
আমি এমন স্বাধীনতা চাইনি,
যেখানে হাসপাতালে চিকিৎসার অভাবে গরীব-দুখী
অবহেলিত হয়ে মারা যায়।
আমি এমন স্বাধীনতা চাইনি,
যেখানে ক্ষমতার মোহে সত্যকে পুঁতে ফেলা হয়।
রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীন দেশে আজও রক্ত ঝরে।
গণতন্ত্রের নামে ক্ষমতার খেলা চলে,
যেখানে সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর শোনা যায় না।
স্বাধীনতা যদি হয় শুধু ক্ষমতাবানদের জন্য,
যদি মুক্তির আলো গরিবের ঘরে না পৌঁছায়,
তবে সেই আলো আমার চোখে শুধুই অন্ধকার।