আমার বানিজ্যিক নাম সিগারেট
আমি ছিলাম নিদ্রায় মগ্ন
একটি মাটির গহবরে
কিংবা আমি ছিলাম সেখানে মৃত।
আমি জেগেছি এবং ভুমিষ্ট হয়েছি
একটি বৃক্ষ আকারে
ধরনীকে আলোকিত করেছিলাম
সবুজের আলোয়
আমি কেড়ে নিয়েছিলাম মানব দৃষ্টি
আর দিয়েছিলাম অক্সিজেন
আর দিয়েছি নতুন প্রাণ।
ধারালো একটি কাচি কিংবা চাকু
একদিন আমার প্রাণ কেড়ে নেয়
আহত সত্বা তখনও নিরাপদ নয়।
আমাকে পর্যায়ক্রমে রক্তাক্ত করে
মেশিনের অভ্যন্তরে ও প্রখর রোদে।
আমি তখনও নিরাপদ নই
আমাকে রূপ দেয় একটি কাগজের লাঠিতে
এই কাগজটির বাড়ি ছিল সবুজ বৃক্ষে।
তারাও এক সময় অক্সিজেন দিত
মানবকুল আর অন্যান্য জীবকে।  
আমার নাম রাখা হয়েছে সিগারেট
তখনও আমি নিরাপদ নই
আমাকে বিক্রি করা হয়েছে শহরে বন্দরে।
আমার শেষ পরিনতি ভয়ংকর অগ্নী
আমার সমাধি রচিত হয়েছে
একটি কালো ধুয়ায় আর
মানব শ্বাস নিশ্বাসের মাধ্যমে।
সমাধি রচিত হয়েছে পায়ের পিষ্টে।
আমার কোন নিস্তার নেই
যদিও আমি এখন মৃত
আমি অপরাধী কিংবা পাপী এখনো
আমি বহু মানব হাসপাতাল পাঠিয়েছি
তারপর পাঠিয়েছি মাটির গর্ভে
তারা আর কখনো ফিরবে না।
এখানেও আমার ক্ষমা নেই
আমি এখন চোখের জলে ভাসি
কারণ আমি অনিষ্টকারী
আমার কাছ থেকে নিরাপদ নয়
দশ বছরের শিশু কিংবা বৃদ্ধ।
পরিবেশ দূষনেও আমি দায়ী।  
ভয়ংকর অগ্নীকান্ডে আমি জড়িত থাকি
আদমের চিৎকারে আমি হই নিহত
সেই সাথে তারাও হয় ভষ্ম।
তাদের কান্নায় আকাশ বাতাশ প্রকম্পিত হয়।
তাদের স্বপ্নগুলো ভেসে বেড়ায়।  
আমাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া বিবাদ হয়
অফিসে আদালতে বাসে লঞ্চে
সেখানেও আমি অপরাধী কিংবা পাপী
আমার কোন ক্ষমা নেই নিস্তার নেই।  
অথচ যারা কৃত্তিম স্বাদ অনুসন্ধান করেছে
আমাকে কালো ধুয়ার পরিনত করে
তাদেরকে একসময় দিয়েছি অক্সিজেন
যা ছিল তাদের বেচে থাকার উপাদান।
তাদের কোন ক্ষমা নেই আর আমারও নেই।