আমি তোমাকে খুঁজেছি-
নীল আকাশের বুকে ভাসমান মেঘের আড়ালে,
যেখানে নক্ষত্ররা ফিসফিস করে তাদের গোপন সুখ দুঃখের কথা বলে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
গভীর অরণ্যের একফালি নির্জনতায়,
বৃক্ষরাজির শিহরিত কোমল স্পর্শে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
দূর গাঁয়ের মাঝখান দিয়ে এঁকে বেঁকে চলে যাওয়া মেঠো পথের বাঁকে,
সবুজ ঘাসের দোলায়,
পল্লীর ধূলোয়।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
পর্বতের খাঁজে খাঁজে,
ঝরনার মুক্ত জলধারায়,
নদীর বিস্তৃত উপত্যকায়,
সমুদ্রের সুবিশাল জ্লরাশির বুকে,
একান্তে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
ভোরের কুয়াশায়,
শিশিরের মাদকতায়,
এক ঝলক নতূন টাটকা বাতাসে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
সকালে খোলা জানলা দিয়ে আসা এক চিলতে আসা রোদ্দুরের ছটায়,
ঝরে পড়া শিউলির মিস্টি গন্ধে,
কাশফুলের মৃদু দোলায়।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
ধনদোওলত মিথ্যা আভিজাত্যের মোড়কে ঢাকা নকল রাজ প্রাসাদের গলিতে গলিতে,
এক মুঠো ভাতের আশায় কাঁদতে থাকা অবুঝ শিশুর ঝরে পড়া অশ্রু জলে,
দারিদ্রে শতছিন্ন কাপড়টা দিয়ে এক নারীর লজ্জা নিবারণের ব্যর্থ প্রয়াসে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
কালবেইশাখীর ভয়ংকর রূপের মাঝে,
আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে,
ভূমিকম্পের সুবিশাল ফাটলে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
জনকোলাহলের মাঝে,
পাখিদের কলতানে,
রাখালিয়া বাঁশির মিস্টি সুরে,
হিমেল হাওয়ার সোঁ সোঁ শব্দে,
একটানা রিমঝিম বৃষ্টিতে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
যুদ্ধের বীভৎসতায়,
শতশত নরনারী ও নিঃপাপ শিশুর নিষ্ঠুর নির্মম মৃত্যুতে,
শয়তানদের জয়লাভের বিকৃত উল্লাসে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
সুরের জাদুতে,
কবিতার ছন্দে,
গল্পের উপসংহারে,
উপন্যাসের চরিত্রে,
নাটকের সংলাপে।


আমি তোমাকে খুঁজেছি-
তোমার মধ্যেই প্রেমে,
ভালবাসায়, এক অফুরন্ত অনাবিল আনন্দে,
তুমি কি মায়া, বিভ্রম নাকি শুধুই স্বপ্ন ?