এলো আবার ঈদের লগন
এই পৃথিবীর মাঝে,
আপ্লুত আজ সবাই মোরা
মধ্যাহ্ন অপরাহ্ন সাঁঝে।
এমনি ভাবে আমার জীবনে
এসেছে আবার ঈদ,
হর্ষপুরীর রাজা আমি
তাইতো চোখে নিদ।
হর্ষপুর বিষাদ ভরা
দুঃখের সুখী মন,
এই মনেতে আসলো -
আবার ঈদেরই লগন।
বলবো আমি কেমন করে
আমার অতীত কথা,
বলতে গেলেই আসবে বুকে
নিস্তব্ধ নিরবতা।
নিম্ন বিত্তের সন্তান আমি
পাইনি দু মুঠো ভাত,
চন্দ্রিকা আর চন্দ্র দেখে
কাটাতাম সারারাত।
চন্দ্রিকা দেখার মূল কারণ
জমি জায়গা নাই-
রাত বাড়লে তাই যেতে হয়
উঠানের সীমানায়।
বাড়ির পাশের ছেলেমেয়েরা
যখন যেত স্কুলে,
আমি তখন কাজ করতাম
শ্রমিকের নানা দলে।
কাজ না পারায় কত যে সয়েছি
মারের ঘায়ের ব্যাথা,
মারটা দেখে প্রকৃতিরও হতো
নিস্তব্ধ আকুলতা।
তবুও মনটা ব্যাকুল হতো
স্কুলে যাওয়ার তরে
নোংরা পোশাকে গন্ধ নিয়ে
যেতে দিত না দ্বারে।
অনেক কষ্টে সেবার ঈদে
কিনলাম কিছু বসন,
লক্ষ্য আমার আয়ত্ত করা
স্কুল শিক্ষার্থীর ধরন।
তারপর থেকে একবেলা
করতাম আমি কাজ,
বাকী সময় সব হতবাক
দেখে শিক্ষার্থীর সাঁজ।
বহু কষ্টে বছর শুরুতে
ভর্তি হলাম স্কুলে,
নিজ চেষ্টায় পড়া করতাম
থেকে শ্রমিকের দলে।
এমনি করে আমার জীবনে
কেটেছে অনেক ঈদ,
কাজ বন্ধ থাকতো বলে
চোখে আসতো না নিদ।
ঈদটা আমায় উপহার দিত
বেদনার সাথে ব্যাথা,
ভুলে আমি থাকতে চাই
সেসব ঈদের কথা।
এমনি ভাবে পার হয়েছে
কেটেছে বহু লগন,
কষ্টে আমার বুক ফাঁটেনি
ফেটেছে আমার মন।
এখন আমি শিক্ষিত
পেশাদার এক যুবক,
অতীত স্মৃতি মনে করলেই
নিজেইতো হই মূক।
ঈদটা সবার সুখের হয়না
বেদনায় কাটে কারো,
সাম্যের পথে এগিয়ে বিশ্ব-
তাদের হাতটা ধরো।
ঈদ মানে শুধুই খুশি
তা হবে না ভাই,
আমার মতো ছেলেদের
দুঃখেরও ভাগ চাই।


--------------সমাপ্ত --------------
ভুল ত্রুটি গুলো জানিয়ে সাহায্য করবেন।


(বি.দ্র-এখানে "আমি" বলতে সেইসব স্বশিক্ষিত কর্মবান, নিজ খরচে পড়ালেখা করা মানুষদের বোঝানো হয়েছে।)