পঁচিশ বছর পেরিয়ে গেল-
কিন্তু সেই ক্ষুধা এখনও মেটেনি।
ছোটবেলায় পাশের বাড়ির এক বন্ধু বলেছিল,
চল্ বাইরে যাই, আজ কাঙালিভোজ, দুমুঠো খেয়ে আসি;
খিদের তাড়নায় ‘না’ করতে পারিনি।

রাস্তার পাশে খাবার বিতরণ চলছিল,
খুব বড় লম্বা লাইন-
এক প্যাকেট খাবারের জন্য যে যুদ্ধ,
ছেলে বুড়ো জোয়ান সবাই শামিল হয়েছিল সেখানে;
বেঁচে থাকার সংগ্রামে কেউ কাউকে ছাড় দিইনি ।

তিরিশ মিনিট যুদ্ধ করে পেয়েছি এক প্যাকেট খাবার,
আনন্দের কী যে বাঁধভাঙা উল্লাস যেন বিশ্ব জয় করেছি।
সেদিন বুঝেছি মানুষের হাহাকার, আর্তনাদের মর্মবাণী
একমুঠো খাবারের জন্য সভ্যতার নির্লজ্জ উল্লাস।

বাসায় এসে খাবারের প্যাকেটটা খুলতেই-
চোখে পড়ল ছোটভাইয়ের সেই ক্ষুধার্ত মুখ।
সামনে দাঁড়ালেই প্যাকেটটা এগিয়ে দিয়ে খেতে বললাম।
খাবার হাতে পেয়ে একটা হাসি দিয়ে এমন ভাব ধরল
যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছে।

গোগ্রাসে কয়েক মিনিটেই খাবার শেষ করে
আমার কাছে সে আবার খাবার চাইল,
মনে হয় ক্ষুধা মেটেনি এখনও।  
আজও মনে পড়ে তার সেই ক্ষুধার্ত মুখ-
কী মায়াবী অসহায় নিষ্পাপ চাহনি!
ওর  ক্ষুধা যেন আজও মেটেনি,
পঁচিশ বছর পেরিয়ে গেল;
ওদের ক্ষুধা আজও মেটে না ।