“আব্বু তুমি কান্না করতেছো কেন?”


প্রশ্নটি করেছিল কোন পিতার রাজকন্যা।
উত্তরটি তাহার মুখ থেকে
বের হওয়ার আগেই উত্তর দিল
বুলেট, ম্যাগাজিন, স্টেনগান।
খুনে রঞ্জিত নির্মম ট্রিগার দিল হানা।
ধুম করে পড়ে গেল একটি বাবা
কোন এক কিশোরী রাজকন্যার বাবা।
তোমার বাবা, আমার বাবা, বিবেকের বাবা।
অ্যাসফাল্টে গড়া রাজপথ হল খুনে লাল।
রুধি ধারা থমকে গেল হায়েনার তলে।
জগতের সকল বাবারা আজ মরে পরে গেল
পঙ্কিল ধরণী তলে।


নির্মম আকাশে কালো মেঘ, বাতাসে সীসার গন্ধ।
মড়া আলোয় যতদূর চোখ যায়
দেখা যায় সারবাধা কালো হায়েনা, - বন্দুক উঁচিয়ে আছে।
সম্মুখে পরে আছে শতশত বাবা
-লাশ হয়ে; বিবর্ণ, পাণ্ডুর, ভাষা নেই
নেই কোন লেশ; মুদিত নয়নে খুন ঝরে পরে।
শতশত কিশোরী এরই মাঝে হেঁটে চলে
হেঁটে চলে মড়া লাশের আইল ধরে।
কার বাবা কোথায়? কে জানে?
বাবাদের মুখ আজ রক্তে ঢেকে গেছে
চিনেও চিনে না সে, পিঙ্গল বর্ণের মুখ।
হঠাত কিশোরী কাকে যেন কোলে তুলে নিলে;
কে এই বাবা? বিবেকের নয়তো?
না! না! না! এই বীভৎস নগরে
কোন বিবেকের বাবা নেই, তারা
মরে গেছে রেনেসাঁর প্রহরে।
এ আমার বাবা।
সেই ভ্রু, সেই গোঁফ, সেই ঘর্মাক্ত কপাল
এ অন্য কারো বাবা হতে পারে না!
আব্বু তুমি উঠ, তোমার জন্য জল এনেছি
এনেছি তোয়ালে; চোখের রক্তটুকু ফেল মুছে
এরপর বলঃ
“আব্বু তুমি কান্না করতেছিলে কেন?”


হে সমাজ, হে বিবেক।
তুমি কি এর উত্তর জানো?
তোমার কি আব্বু নেই, নেই রাজকন্যা?
তোমাকে কী কেউ শুধায় না?
“আব্বু তুমি কান্না করতেছো কেন?”
নাকি সব মরে গেছে রেনেসাঁর প্রহরে?
তারপর থেকে কালো এপ্রোন পরে
কালো চশমায় চোখ ঢেকে
দাঁড়িয়ে আছো পঙ্কিলতার মোড়ে?
ভয়ানক অন্ধকারে যাকে পাও
গুলি করে দাও ফেলে মেরে?
কলি যুগ পার হয়ে গেল, দেখো রাস্তায় লাশের স্তুপ
আর কত রবে বোবা নিষ্চুপ?
এবার সরাও কালো চশমার ঠুলি
দেখো কত লাশ!
লাল লাশ, নীল লাশ, পিঙ্গল বর্ণের লাশ!
কোন কিশোরীর পিতার লাশ
কোন পিতার কিশোরী কন্যার লাশ।
কোন মাতার কলিজার টুকরার লাশ
কোন কলিজার টুকরার মাতার লাশ।
কোন বোনের ভাইয়ের লাশ
কোন ভাইয়ের বোনের লাশ।
কোন চাচার ভাতিজার লাশ
কোন ভাতিজার চাচার লাশ।
কোন প্রেয়সীর প্রেমিকের লাশ
কোন প্রেমিকের প্রেয়সীর লাশ।
লাশ, লাশ, আর লাশ!
অজস্র লাশ স্তুপ হয়ে আছে!
হে বিবেক, হয়তো শত লাশের ভীরে
পরে আছে তোমারও কিশোরী কন্যার লাশ!
কাছে গিয়ে বল-
“আম্মু তুমি মরে পরে আছো কেন?”
উত্তর পাবে না, পাবে না, পাবে না।
মড়া লাশ কখনো শোনে না আহতের আর্তনাদ।


০৩.০৬.২০১৮
-ক্যারূ মানদল-
লাবাক, টেক্সাস