প্রিয় হতে পারিনি কারো
যে শুধু আমাকেই চিনবে
শত সহস্র মানুষের ভীড়ে
যে শুধু আমাকেই খুঁজবে তার দৃষ্টির সীমানায়।


এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
যে শুধু আমার জন্যই অপেক্ষা করবে,
অপেক্ষা করবে মধ্যরাত পেরিয়ে যাওয়া
শুনশান নিরবতায় আচ্ছন্ন রাতে,
অপেক্ষা করতে করতে, বেণী ভাঙা চুলের ভাজ নষ্ট হবে
তবু অপেক্ষা ফুরাবে না।


এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
আমাকে একদিন না দেখেই ফোন করে বলবে
এই, কোথায় তুই? জানিস না-?
তোর ম্যাজাজ খারাপ মুখাবয়ব না দেখে থাকতে পারিনা।
কলমধারী মানুষ গুলো কত কোমল হয়, আর তুই-?
আমি হয়তো জন্মগতই এমন
আমার চোখ কখনো কথা বলে না
ফিকে হাসির উম্মাদে সে কখনো হাসতে জানেনা
কোন মিথ্যের আশ্রয়ে সে কারো প্রিয় হতে চায় না।


এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
যে আমাকে নিশি জেগে আবৃত্তি শোনাবে,
এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
যে আমাকে নিশি জেগে গান শোনাবে।
আমি যখন খসে পড়া নক্ষত্র দেখি
গাছের ডালে বসে থাকা পেঁচার ডাক শুনি
যখন এলিয়ে পড়া চাঁদের দৃশ্য দেখি
তখনো কেউ আমার নিরবতা ভাঙাতে আসেনা
আজও হিসেব রাখা হয়নি'তো
এভাবে কত রাত ভোর হয়ে গেছে।


এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
কাদা ভরা পথে যখন এগিয়ে যাই হেটে
কেউ পেছন থেকে বলবে,
পিচ্ছিল পথ চেয়ে চেয়ে হেটো,
এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
একটুকু আলো দিয়ে পার করে দিবে অন্ধকার পথের গলি
আমি পেরিয়ে যাবো জীবনের সীমাহীন পথ।


এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
তবুও কি থেমে আছি? নেই তো!
জীবন যাচ্ছে কেটে এইতো।


এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
কেউ একদিন হাত ধরে বলবে
কোন এক অদূরে চলে যেতে চায় মন
যেখানে এসে থেমেছে নদীর মোহনা
যেখানে ঢেউগুলো অবিরাম খেলা করে
চলনা আজ হেটে বেড়াই চিকচিক করা বালুর চরে।


এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
পান্ডুলিপি লুকিয়ে রেখে বলবে
"বলবে কি-? তোমার শেষ কাব্যের স্পন্দন কে"?
ধূলি-বালি জমে থাকা পান্ডুলিপি
এভাবেই হয়তো একদিন অযত্নে পড়ে থাকবে
পড়ে থাকবে অপ্রকাশিত-
আমার হাজার অনুভূতির অণুছোঁয়া,
একদিন যখন রচিত হবে, এই মাটিতে আমার কবর
তখন কে নিবে আর-?
আমার, অথবা আমার কবিতার খবর।
খসে পড়া নক্ষত্রের মত, একদিন সব কিছুই হয়ে যাবে বিলিন।


এতটা প্রিয় হতে পারিনি কারো
এক ফোটা অশ্রু ঝরাবে কেউ আমারি জন্য
আমারি শুন্যতায় কারো হৃদয় পুড়াবে বিরহী বহ্নি।


রচনা
১০ই জুলাই ২০২১ ইং
তাল পুকুরপাড়,  কুমিল্লা।