হাসিমুখে নয় কিছুটা অবাক হযে
জিজ্ঞাসীনু "কেনে গো দিদি পায়ে হেঁটে ,
গতরে এত আঁচর লাগিল কেমনে ?"
কোন উত্তর পাইনু না ,
সোজা চলিল ঘরে ।
বুঝিনু যৌতুকের লাগি ,
জোড় করে পাঠায়েছে স্বামী ।
কথা না বাড়ায়ে চলিনু টাকার খোঁজে ,
না পেয়ে বেচিনু জমিটুকু বাবুদের কাছে ।
টাকা নিয়ে আসিয়া বাড়ি ,
কহিনু "ওঠ গো দিদি , টাকা আনিছি ,
কর না দেরি , তরা করি যাও বাড়ি ,
সুখে সংসার গড় নিয়ে সন্তান স্বামী ।
হিদুর ঘরে জন্মেছি এটাই বড় শাপ ,
যৌতুক দিতেই হবে নইলে পাব না মাপ ।"
এতেক কহিয়া যবে প্রবেশিনু ঘরে,
দেখি দিদি নাই ,মলিন দেহ রেখে
চলিয়াছে পরপারে ।
অভাগা মুই , দু:খ ক্ষোভ মনে রেখে ,
তারেও পুড়িনু এই শ্মশানে ।
এতটুকু বয়সে , বংশের প্রদীপগুলোরে
একে একে নিভাইনু হেথায় , এই শ্মশানে ।
একা হয়ে একদা চাঁদনী রাতে ,
তোমারে মুই তুলিনু ঘরে ।
ভেবেছিনু আবার মোর ভরিবে সংসার ,
কিন্তু ভাগ্য দোষে রহিনু সন্তানহীন জনমে ।
অভাবের তাড়নে একদা গেনু শহরে ,
কিছু টাকা কামাইয়া ফিরিমু ঘরে ।
কিন্তু শহর , সে তো বড় কঠিন ,
কাম না পাইয়া গেল বহুদিন ।
অবশেষে বহু কষ্ট ,
কিছুটা কামাইয়ে ,
ফিরিনু ঘরে ।
ফিরে দেখি তুমি নাই ,
মোরে ফেলে চলিছ ওপারে ।
সেই থেকে মুই শ্মশান বাসী ,
শ্মশান মোর ঠিকানা ।
হেথা মুই মোর স্বজনেরে পাই ,
পাই তোমার ছোয়া ,
তোমারে ফেলিয়া তাই যাইমু বল কোথা ?