এই তো সেদিন দেখিনু তোমারে ,
একেলা বটতলে বসিয়া আনমনে ,
ভাবিছ কি'বা গভীর ধ্যানে ।
ভাবিনু কাছে যাই , কিন্তু না ,
বলা না যায় কি নাও স্মরণে ,
এতেক সংকোচে নাহি গেনু ধারে কাছে ।
রহিনু দূরে , ঠেলিনু কিছু সময়
তোমারে দেখিবার তরে ।
দেখিনু তরুলতা সম , দেহখানি তব ,
হেলায়ে বটমূলে , বিরহিনী , বসিছ এলোচুলে ।
সখী , এ দৃশ্য প্রাণে না সহে ,
বারে বারে মন কাঁদিতে চাহে ।
তুমি মোর প্রথম প্রেম ,
শেষটাও তুমি ,
তোমার এমন দিনে মুই কি সুখী ?
একদা ছিলে মোর হৃদয় জুড়ে ,
সপেছিনু তাই মন গোপনে ।
কিশোরী তুমি চঞ্চল অতি ,
মনে তোমার ছিল কি তাহাই না জানি ।
বহুবার বলিতে চাহিছিনু মনের কথা ,
বলি নাই সখী , যদি যাও ছাড়িয়া ।
আপনার মনে তোমারে ভাবিয়া ,
শত অলংকারে প্রাসাদ গড়িয়া ,
কাটিল যে দিন ,
বলি বলি করিয়াও হয়নি বলা ।
একদা হঠাত্‍ আসি মোর ঘরে ,
বলিলে কাঁদ কাঁদ স্বরে ,
"সাত জনমের সাথী কর যদি মোরে
চল পালিয়া যাই আজি সব ছেড়ে ।"
সেদিন ফিরায়ে হারাইনু চিরতরে ,
ভাঙিল মোর স্বপন , ভাঙিল প্রাসাদ ,
লক্ষিরে ঠেলিনু মুই আপন পায়ে ।
মোরে ছাড়িয়া ওহে অবোলা নারী ,
চলিয়া গেলা স্বামীর বাড়ি ।
জনম দুঃখী তুমি , সুখ নাই কপালে ,
স্বামীরে হারাইলে তাই বড় অকালে ।
বাঁচিবার সহায় ছেলেটিও হায় ,
ক'দিন আগেই মরিয়া যায় ।
আহারে অভাগী , বিরহিনী জননী ,
তোর দুঃখে আজি পরাণ যায় ফাটি ।