আমি লিখতে গেলেও লিখতে পারিনা,
আমি বলতে গেলেও বলতে পারিনা।
আমি চিৎকার করেও বলতে পারিনা,
আমি করুণ সুরেও যে জানাতে পারিনা।  
আমি যে আছি, আমি যে ছিলাম,
আমি যে শিক্ষক, আমি যে মানুষ গড়ার কারিগর।
লিখতে গেলে আজ থমকে যায়,
তিনটি অঙ্গুরি মাঝে, ধরে থাকা কলমটি।
বলতে গেলেও ভয়ে কেঁপে ওঠে,
পাঠদানের সেই সুরেলা স্বরযন্ত্রটি।
স্তব্ধ হয়ে যায়, রুদ্ধ হয়ে যায়,
ভোকালকর্ডের সেই আওয়াজটি।
আমি যে শিক্ষক, আমি যে শিক্ষা গুরু!
আমি যে গর্বিত, তোমাদেরই গর্বের কারণ।
দিতে যে এসেছি আজ, তোমাদের দিতে শিক্ষা,  
তোমাদেরই সন্তানেরে, মানুষের মত মানুষ করতে।  
সমাজ গঠনে, জাতি গঠন্‌ নৈতিকতার শীর্ষে,  
আদর্শ আর জ্ঞানী-গুণি, সম্মানী সুনাগরিক করতে।
নিজের সন্তানেরে নিজ গৃহেতে, করি যেমনি শাসন,  
তোমরাও যে এই নিকেতনে, তেমনি নিজেরই সন্তান।  
শাসনের সময় করব শাসন, আদরের সময় আদর,
জ্ঞানের আলো জ্বালিয়ে দিয়ে, গড়ে দিয়ে যাবো প্রাণ।  
এই পন নিয়ে বেঁছে নিয়েছিলাম নিজেরই মহান পেশা,
শিক্ষক আমি, আমি যে আজ তোমাদেরই করুণার পাত্র।
বারে বারে আজি মনে পড়ে সেই সোনালী দিনের কথা,
আমরাও যে ছিলাম একটি সময়, তোমাদেরই মতো ছাত্র।
আমাদেরও ছিলো শিক্ষক, ছিলো শিক্ষা গুরু,
লইতাম শিক্ষা প্রাণ ভড়িয়া, ধন্য করিতাম জীবন।
মস্তক রাখিয়া তাহাদের পদে, করিতাম শিক্ষা গ্রহন,  
শীর নত হইয়া তাহাদেরই শ্রীপদে, গর্বে ভড়িত বুক।
ধন্য জীবন, ধন্য জনম, ধন্য শিক্ষার আলো,
সেই যুগে মোরা ছাত্র ছিলাম, দিয়েছিলাম শিক্ষা গুরুর মান।
ভাবতেই মন কেঁদে ওঠে আজি,
সেথায় ছিলো শিক্ষা আর শিক্ষকেরই মান।  
আজি এ কোন কাল হইলো শুরু,
দিতে হচ্ছে, ছাত্রেরই হাতে, শিক্ষকের বলিদান।
কিছুই চাইতে আসিনি, কিছুই পাইতে আসিনি,
এসেছি শুধু, তোমাদেরই, মানুষের মতো মানুষ করিতে।
জ্ঞানের প্রদীপ জ্বালিয়ে দিতে,
করে যেতে আলোকিত মানুষ।
সম্ভ্রম হানী, সম্মান হানী,
মৃত্যু যন্ত্রনা মাথায় নিয়ে
বরণ করিয়া নিয়েছি আজি  
তোমাদেরই হাতে, ছিন্ন মস্তক খানী।
এই ছিলো বুঝি চাওয়া-পাওয়া,
এই ছিলো বুঝি শিক্ষার প্রতিদান।
সম্মান হানী, সম্ভ্রম হানী, লাঞ্ছিত মনে প্রাণে,
জীবন দিয়ে রেখে গেলাম আজি,  শিক্ষকতার মান।।