দশদিক উৎকন্ঠিত আজ রমনার সভা—সমুদ্দুরে
মাটি মানুষ বৃক্ষতরু সবুজঘাসের সাদাকষ্টে
প্রাচীন প্রাসাদের মতো ভেঙে পড়ে বাতাসের সিড়ি
অথচ, দীর্ঘদেহী পর্বত পুরুষের আঙুলের ইশারায়
মহাকালের উন্নতশির ছুঁয়েছে স্বপ্নের অসীম আকাশ
শ্যামল মায়ের অশ্রম্নসিক্ত আঁচলে আজ রক্তে লেখা হবে
শোষিত বঞ্চিত নির্যাতিত নিপীড়িত বাংলার ইতিহাস
তুমুল রোদ্দুরে বৃদ্ধ—বাবার কপালের ভাঁজ চুঁইয়ে নিঃসৃত—
তরলকষ্ট স্বপ্ন ভঙ্গের নোনাজল একাকার মুক্তির প্রার্থনায়।


মুক্তি চায়—রক্তে ভেঁজা মমতাময়ী মাটির ঐতিহাসিক উর্বরতা
মুক্তি চায়—পরাধীনতার শৃঙ্খলাবদ্ধ মুমূষুর্ স্বাধীনতা
মুক্তি চায়—সুদূর শৈশবে তালপাতার ভাঁজপত্রে লেখা বাংলাবর্ণমালা
মুক্তি চায়—সবুজ অরণ্যে অবরুদ্ধ নীল ময়ূরী মায়াবী হরিণ
মুক্তি চায়—পদ্মা মেঘনা মধুমতি কীর্তিনাশা নদীর স্বপ্নিলগতি
মুক্তি চায়—রাখালের ভাঙাবাশি—ভাটিয়ালী গানের সুমধুর সুর
মুক্তি চায়—কিষাণ—বধুর মধুর হাসিতে মুগ্ধ হেমন্ত সকাল
মুক্তি চায়—বিষাদের বর্ষণে ক্রন্দনরত শোকার্ত শ্রাবণের রাত।


কিন্তু হায়! মুক্তির মোহনা কোথায় কাঙ্খিত গন্তব্য আর কত দূর
প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির বিস্তর ব্যবধানে বেদনায় নূজ্ব পৃথিবী
বেদনার্ত বাতাসে ভাসে অনিশ্চিয়তার অন্তহীন ব্যাকুলতা
এমন ভয়ালদৃশ্য কখনও দেখেনি এ ভূখন্ডের সরল সহজ মানুষ।


আকস্মিক অগ্নিমানবের বজ্রকন্ঠে থেকে উচ্চারিত হলো মুক্তিমন্ত্র—
‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, জয় বাংলা’
সেই থেকে আমাদের এই ভূখন্ডের প্রতিইঞ্চি মাটি স্বাধীন
শস্যের শিল্পিরা সোনালিশস্য গোলায় তোলায় অধীর আগ্রহে
মানসিকভাবে তারা এখনও প্রস্তুত যার যা আছে তাই নিয়ে।