সুবর্ণরেখার হাঁটুজলে খুঁজে বেড়াই তোমায়
চিকচিকে বালিতে তোমার পায়ের ছাপে পা মিলিয়ে
হেঁটে যাই বহুদূর ; ঠিক পৌঁছে যাই তোমার কাছে,
আর ছদ্ম রাগে জানতে চাই দেরীর কারণ
তুমি ফিরে তাকাতেই নিমেষে রাগ জল।
তারপর...আমার একটানা পাগলামি সহ্য করতে করতে
হঠাৎ করে সাইকেলে পাড়ি
পেছনে ছুটতে ছুটতে বলতে থাকি, আমায় ফেলে যেও না
প্রতিধ্বনিত হয় যেও না... যেও না... যেও না...  


বর্ষায় ভিজে মাঠ জল থইথই
দু হাত বাড়িয়ে বলো কাছে এস সই
দুজনায় গেয়ে উঠি ,"ঘাসে ঘাসে পা ফেলেছি "......
হঠাৎ ই চমকে দেয় অঝোর শ্রাবণ
আবারও দুজনে দিই সাইকেলে ছুট ।  


বিগ্রহহীন পরিত্যক্ত সেই ভগ্ন মন্দিরে
গড়ে উঠেছিল নিভৃতে বাসর শয্যা
আমাদের ভালবাসার নীরব সাক্ষী ছিল অদৃশ্য দেবশিশুরা।


এমন করেই চলতো বুঝি আমাদের এই ভালবাসা
কিন্তু সেদিন মোড়ের বাঁকে
গফুর চাচার সাথে হল দেখা
' হেই মাইয়া, ইদিক পানে আয়
বোসেদের পোলার লগে উদলা পিরীত করস তুই
সাবধান হ , নইলে তর বিপদ আসে'...
বুক ঢিপঢিপ , চোখে জল পালিয়ে বাঁচি।


ক'দিন পর আবার নদীতীর... তোমায় পাই না
মুখ ভার  ফিরে আসি ; পরদিন আবার যাই
চিকচিকে বালিতে পাই না তোমায়; ঘাসে ঘাসে খুঁজে ফিরি
বালির গায়ে ,ঘাসের আগায় রেখে আসি আমার চোখের জল
যদি তুমি ফিরে আসো বুঝবে আমি এসেছিলাম ।


ফেরার পথে গফুর চাচা বলে ওঠে , ' কি রে মাইয়া পাইলি পোলাটারে ?
সে তো গ্রাম ছাইড়া চইল্যা গ্যাছে'
চমকে উঠে পালাতে যেতেই গফুর চাচার অট্টহাসি তাড়া করে আমায়।
আম্মি বলে , 'ভুইল্যা যা , শান্তি পাবি'
কি করে বোঝাই শান্তির জন্যই ছিল এই ভালবাসা
তবে তোমরা যুগে যুগে ভালবাসার মাঝে ধর্মকে কেন টেনে আনো !


আজও ঘুরি নদীর ধারে, ঘাসে ঘাসে ,বালুতীরে , ভগ্ন মন্দিরে
যদি আবার আমার ভালবাসার দেখা পাই ।