হাতে বাঁধা সংসার
আজ নন্দিনীকে অনেক দিনপর দেখলাম
প্রথম  চিনতেই পারিনি দেখে
তীক্ষ্ণ চাহনি, বিষাদে ভরা মুখের হাসি
সব কেমন বদলে দিয়েছে ওকে।।
সেই কবে আমাদের শেষ দেখা হয়েছিল
কথাও হয়েছিল খুবই সামান্য
বলেছিল,
আমি চললাম এই ঘর, পথঘাট ছেড়ে
নতুন আবাসে মানুষগুলোও সব ভিন্ন।।
শুনেছি ওর নাকি মস্ত শশুর ঘর,
গোলাভরা ধান
দিনকাটে তার আনন্দ-আহলাদে
আজ দেখে মনে হলো,
ওসব মিথ্যে, কেবলই গল্প
চোখ দুটো বিষণ্ন, মুখে মেঘ জমেছে বিষাদে।।
সেদিনের নন্দিনী ছিল বড় চঞ্চল,
আজ বড় ক্লান্ত
বৃষ্টি ঝরতো তার গানে আর উচ্ছলতায়
আজ ভীষণ খরা, অনাবৃষ্টিতে বুকের জমিন
খাখা রোদ্দুর,যেখানে স্বপ্ন পুড়ে যায়।।
কতই বা বয়স হবে , সেদিনের কথা মনে পড়ে
দুজন ছুটে বেড়িয়েছি, গাঁয়ের এপথে ওপথে
আজ ওর পায়ে বাঁধা শক্ত বেড়ি, ভীষণ ভারি
হাসির ছাপ মুছে গেছে সংসারের ভার বইতে।।
ওকে শুধাই,
কেমন করে হেরে গেল সংসারের কাছে
কেমন করে ঘটল জীবনের এমন দুর্দশা
সংসার তো জড়, প্রতিবাদ জানেনা, বাঁধ সাধেনা
তবে কি ওরা বুঝলনা তোর আশা- ভালবাসা !!
নন্দিনি হাসে, যেন ডুবে যাওয়া চাঁদের হাসি,
বলে-
তুই আগের মতই আছিস, এতটুকুও যাসনি বদলে
আমিও হাসি,
নারে আমি তো ডানপিটে মেয়ে, জানিস,
আমি নিজের ভাগ্য নিজের হাতেই নিয়েছি তুলে।।
তোরা নন্দিনীরা চিরকাল এমনিই থাকবি, হাসতে ভুলে যাবি বোবা কান্নার ঢেউয়ে সাঁতার কাটবি দিন-রাত
আমাকে দেখ, সংসারকে বেধেছি,
কিন্তু আমি বাঁধা পড়িনি,
নিরবতা ভেঙ্গেছি, ভেঙ্গেছি বাঁধা,
সরায়েছি আঘাত।।
১১ জানুয়ারি, ২০১৭ ।