কবিতার শব্দ এসেছিল মনে
ভীড় করেছিল ব্যস্ত বারান্দায়-
তখন আমি দৈনন্দিন কর্ম যজ্ঞে
ঘামের বিন্দু বিন্দু জলে ভরে নৈবেদ্য;
মনে পড়ে, পাতের এককোণে, ক্ষুধার অন্নে
ছড়িয়ে থাকা নিরস হাসির পদ্ম ।।


কবিতার শব্দ এসেছিল মনে
আঁচল ধরে অতি গোপনে
তখন আমি রন্ধনপ্রণালীতে লিপ্ত-
কড়াই-খুন্তির আওয়াজ, ঝাঁজালো গন্ধ
মিলিয়ে গেল সেই শব্দ;
তখন মনে পড়ে, মর্মর ধ্বনি সেই নদীটার
যার বুক  রৌদ্র-তাপে শুকিয়ে দগ্ধ ।।


কবিতার শব্দ এসেছিল মনে
ভাবনার উদয় হয়েছিল আনমনে-
তখন আমি বাজারের পথে
দৈনন্দিন চাহিদার তালিকা হাতে-
মিলিয়ে গেল শব্দ
চোখের কোণে ধূলার আস্তরণে ;
মনে পড়ে, জীবনের সন্ধ্যা বেলায়
মন ভারি হয়েছিল তীব্র বেদনায়
বিলিন হয়ে যাওয়া আলোর সন্ধানে।


কবিতার শব্দ এসেছিল মনে
রিমঝিম তালে তালে অমৃত বরষায়
তখন আমি  ঘড়ির কাটার সাথে
তাল মিলিয়ে ছুটছি অফিস পাড়ায়;
মনে পড়ে, শূন্য আকাশে চেয়ে থাকা
দুরন্ত যৌবনের দীর্ঘশ্বাস-
যা ভরা ছিল তীব্র অভাবের তাড়নায়।


কবিতার শব্দ এসেছিল মনে
তন্দ্রাচ্ছন্দ চোখে, খুশির বদনে
তখন আমি গুরুগম্ভীর মনে, সংগোপনে
পাড় করেছি বার্ধক্যের চির প্রাচীর;
মনে পড়ে, মায়ের ক্লান্ত দেহখানি
বাবার দীর্ঘশ্বাসে ছড়িয়ে থাকা
শিশুর হাস্যময়ী মুখের আসমানী আবির ।


কবিতার শব্দ এসেছিল মনে
স্বপ্নের মত, মিলিয়ে যাওয়া ধোয়ার মত;
আমি তখন, গভীর ঘুমে
আস্বাদন করি কবিতার সুগন্ধ
মনে পড়ে, দীর্ঘশ্বাস বয়ে বয়ে
গচ্ছিত রাখা সেই পুরনো অভ্যাসে
কবিতায় মত্ত থাকা অবিরত ।।