ভীষণ শঙ্কার মাঝেও এখন মনে হয়
প্রতিদিনই অনাবিল সুখের দিন।
পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে
ওরা ডানা ঝাপটে, পাতা  নাড়িয়ে
উড়ে যায় দূরে-
ঘর থেকে দু’পা বেরিয়েই বিল
বিলের একপাশে দাঁড়ালেই
দূর গ্রামের গাছপালার ভিতর থেকে
সূর্যকে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে দেখি।
সজনে ডাটার কচি কচি পাতার সাথে
কচি আম-জামের গন্ধে মন ভরে ওঠে।
প্রতিটি নিঃশ্বাসে বুক ভরে উঠে-
এমনটা আগে কখনো হয়নি।
শহরে  যন্ত্রের শব্দ কান স্তব্ধ হয়ে উঠতো
ভারি বাতাসে দম আটকে বুক ভারি হয়ে উঠতো।
মাটির চুলায় প্রতিদিনের রান্নার গন্ধ
স্বাদের চেয়েও বেশি প্রিয় মনে হতে লাগলো।
সারাদিন হৈচৈ, খাওয়া দাওয়া-
বিকেল হলেই খোলা বিলের জমির আলে বসে
রঙ বেরঙের ঘুড়ি উড়তে দিখা-
এ যেনো এক অন্য জগত
যা ত্রিশ বছর আগে হারিয়ে গিয়েছিলো জীবন থেকে।
শহর থেকে প্রায় দুইশ কিলোমিটার দূরে আমাদের গ্রাম
আজ লগডাউনের ৪৬ দিন পার করছি এইখানে।
মাটির স্পর্শ-
সবুজের গন্ধভরা হাওয়া-
পুকুরের টলমল জল
জীবনটাকেই বদলে দিয়েছে।
শহরে ফেরার ডাক এসেছে
কিছুতেই ফিরতে চাইছে না মন
আবার ফিরবো-
চাকুরীর জীবন থেকে অব্যাহতি পেলে
বাকী জীবনের জন্য চির অবসর নিয়ে
সবকিছু গুছিয়ে এই মাটির মধ্যেই শেষ আশ্রয়ের জন্য
আবার ফিরবো-নিজেকে এই বলে সান্তনা দেওয়া ছাড়া
আর কিছুই করার নেই।