বাসন্তীর গল্প
--------------------
তীব্র আলোয় ওটি টেবিল
বাসন্তীর বড়  ভয় হয়,
স্বামী নেই সাথে
নেই কোন স্বজন
বাসন্তী একমনে ঠাকুর  ডাকে
চোখের জলে খোঁজে তার মাকে।


ও-ই যে ডাক্তার আপা মনি
বলে হাত ধরে মিনতি করে।
আপা, আমার বড়  ভয় লাগে,
মায়েরে থাকতে দেন  আমার লগে।
ডাক্তার মাথা নাড়ে,
ওটিতে কেউ আসা যাবে না।
তা কি করে হয়,
আমি কি করে থাকব , একা এত সময়।


ছোটকালে  সাগরে নিখোঁজ হওয়া
বাপের ওপর বড় অভিমান হলো,
অভিমান হলো খিস্তি খেওর করা
মাতাল স্বামীর ওপর,কতদিন
তার বাদশাহী লাথি খেয়ে
পড়ে গেছে  হাচর পাচর।
পোয়াতিরে কেউ এমন করে মারে।
গত রাতে দাই বুড়ির ঘাম ছুটে গেল,
বললো হাসপাতালে নিয়া যাও।
স্বামী লালচোখ মেলে,
শাশুড়ী কয়,
আহা লাটের বেটি
হইছে পোয়াতি।
কত কিছু মাগে
বাচ্চা বিয়াইতে হাসপাতালও  লাগে।


রক্ত লাগবে আরো রক্ত
কে দেবে বাসন্তীরে?
কোমরে মায়ের মাদুলী
শক্ত আঁটসাঁট,
মরবো নাকি আজি!নাহ বালাই ষাট।


সেই বাসন্তীর ফেরা হয় না ঘরে
সিজার টেবিলে নিথর হয় শরীর,
সমস্ত সংগ্রাম লড়ে
পরাজিত ডাক্তার চেয়ে থাকে অপলক,
বাসন্তীর গল্প থামে,
থাকে রক্ত, কপালে সিঁদুর, মৃত্যু তিলক।


(ছবি - প্রতিকী,সংগৃহীত)