বেচারাম দেউরি
--------------------------
বৃষ্টি এসেছিল দুপুরে
একদম ঝুম লয়ে  বৃষ্টি,
অনেকক্ষন এক নাগারে
আমি অপেক্ষা করেছি
অনেকটা সময় ধরে।
সেই যে আবহমান ঠিকানা
বেচারাম দেউরি পায়রা চত্বরে।


অপেক্ষা আমার জন্য নতুন নয়
বহুকাল থেকেই আমি অপেক্ষা করে আসছি।
খুব ছোট খেলায় বউচি খেলায় নিবে বলে
আমি সাগ্রহে সঙগীদের দিকে চেয়ে থেকেছি বহুদিন।
কতদিন  ভাইকে বলেছি আমাকে সাথে নিয়ে যেতে,
ভাই আমার নিয়ে যায় নি  কোনোদিন।
তবুও আমি আশায় থেকেছি  নেবে নিশ্চয় একদিন।
একসময় বাড়ির সবাই বেড়াতে যাবে
শুধু বাবা বললেন আমাকে না যেতে।
আমাকে নাকি মজা এনে খাওয়াবে
আমি বাবার সাথেই ছিলাম,
কিনতু সেই মজা আর খাওয়া হয়নি।
কতদিন  বাবাকে বলেছি
একজোড়া নতুন জুতোর কথা।
বাবার মৌনতায় আমিও বহুদিন
সেই জুতোর অপেক্ষায় ছিলাম।
সেই অপাংক্তেয় শৈশবেও  আমি
বড় হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম।


যেদিন তুমি চলে গেলে সেই সময়েও
বহুদিন ঘুম ভাঙা রাতে আমি অপেক্ষা
করেছি তোমার ফিরে আসার।
কি অর্থহীন, কারনবিহীন অপেক্ষা।


ওটি টেবিলে উঠতে হবে জেনে
আমি থেকেছি  স্বজনের অপেক্ষায়।
অপারেশনের পরও কতদিন তৃষিত
অপেক্ষা গেছে আমার।
যাই হোক,সেই সময় কেউ যে আসে নি তা নয়।
আমি বিছানায় শুয়ে দেখতাম কাক আসত
ব্যলকনিতে।
পরে আমি কাকদের ও অপেক্ষায় থাকতাম।


কতদিন গেছে আমি তোমার ফোনের
অপেক্ষা করেছি।
ভেবেছি বলবে একদিন,  
কেমন আছো, কেমন যায় দিন।
অথবা একদিন ঘুম ভেঙে দেখব,
চা এর কাপ হাতে তুমি নিয়ে বাকরখানির টিন।
সাকরাইনের দিনে আতশবাজি শুধু পোড়ে না,
আমিও হৃদয় পুড়িয়ে অপেক্ষায় থাকি।


এখানে বৃষ্টি পড়ে রোদ হাসে,
কেউ চলে যায়,কেউ আসে।
অনন্ত আমিই অপেক্ষা করি
অন্য ঘরে চলে যাওয়া তোমার,
ওপারে যাওয়া আমার বন্ধুদের,
আমার স্বজনদের,
অপেক্ষায় দোতলা বাড়ি এই ভাঙা ঘর
সেই বেচারাম দেউরি পায়রা চত্বর।