আমি হাজার বছর ধরে অপেক্ষা করছি তোমার
ফিরে এসে দু হস্তে বক্ষে জরিয়ে ধরবে বলে।
পথের পানে চেয়ে থেকে থেকে দুচোখ ক্লান্ত
কালো দাগ পড়েছে চোখের নীচে
কতোবার বৃষ্টিতে ভিজেছি,
রোদ্রের দীপ্ত আলোয় শুকিয়েছি শাড়ী।
তুমি যে পথ ধরে হেঁটে গিয়েছিলে,
তোমার খোশবু নিতে গায়ে মেখেছি পথের ধুলো,
বুক ভরেছি তোমার খোশবু মেশানো হাওয়ায়
বিনিদ্র রজনী কষ্টের দহনে ভোর করেছি
ভোরের শিশিরে ভিজেছে এলোমেলো কেশ।
আমি দেখেছি নিশীতে রাস্তার দুপাশে দাড়িয়ে থাকা হাজারো ভ্রষ্টাচারিণী খদ্দেরের সাথে আমোদ প্রমোদ করতে
আমি অনুভব করেছি ভ্রষ্টাচারিণীদের বুকের অন্দরে লুকিয়ে রাখা কষ্টকে।
পৃথিবীতে যখন বসন্ত আসে, কোকিল গান গায়
ফুলের সুভাসে মুখরিত কানন, পাহাড়ি উপত্যকা গুলোতে ফিরে আসে পূর্ণ যৌবন, মরুভূমি ঢাকা পড়ে কুয়াশার চাদরে
ডানা কাটা ব্লাউজের উপর হালকা বেগুনি শাড়ী পড়ে, এলোমেলো খোলা চুলে মিলনের অতৃপ্ত বাসনায় অপেক্ষা করি তোমার
ফিরে এলে সাজানো বাসরে রজনী যাপন করব বলে।
বুকের ভেতরের ক্ষতটা অনেক বিস্তৃত হয়েছে
কষ্ট গুলো হিমালয়ের মতো শির উঁচু করে দগ্ধ করছে মম হৃদয়।
তুমি ফিরবে বলে গোলাপ, গাঁদা, রজনীগন্ধা আর বকুল দিয়ে বাসর সাজিয়ে ছিলাম
প্রতিদিন বিছানার উপর ঝরে পরে গোলাপের পাপড়ি
আর কতো ভোর করবো কষ্টের বিনিদ্র রাত্রি?
তুমি কি এইভাবেই করবে আমায় পরপারের যাত্রী?
তুমি আসবে বলে কৃষ্ণচূড়া আজ রক্তিম
আকাশ তার গায়ে মেখেছে নীল রং
যৌবন ফিরে পেয়েছে মৃত ঝর্ণা
জোয়ার ফিরে এলো সিনাই গাঙে, ঝাপটে পড়েছে পানকৌড়ি, মাছরাঙা, ধবল বক।
এখন তো তোমার আপন শরাবের পেয়ালা
আমাকে ভুলে থাকতে তোমার কোন কষ্ট হয় না
শরাব পিকে ঘুমাতে পার পৃথিবীর সবকিছু ভুলে
ঘুমের ঘোরেও আমি যাইনি তোমার পাশে।
আমার ভুলগুলো তুমি ক্ষমা করতে পারনি
হেরে গিয়েছিলাম আমার এক রুখা জেদের কাছে
ভিতরে আজ রক্ত ক্ষরন হচ্ছে, চিবিয়ে খাচ্ছে অন্তর
আমি আজ সবকিছু জলাঞ্জলি দিয়ে ফিরে যেতে চাই, ফিরে পেতে চাই
তোমার চিত্তে শির রেখে একটু নিদ্রা যেতে চাই।
তুমি ফিরে আসবে বলে মেহেদী পাতায় রাঙিয়েছি দু'হাত
জানি তুমি বলবে এ শুধু সবুজ পাতার গাঢ় কালচে রং নয়, এ তোমার হৃদয়ের লোহিত রক্ত।
আচ্ছা, আমি কি কখনো তোমার সাথে কথা বলে পেরেছি
তুমি যুক্তি দিয়ে সবসময় জিতে থাকতে,
আগেও পারিনি, আজও পারবোনা।
তুমি মৌমাছি হয়ে ফিরে এসো আমার পুষ্পকাননে,
আলতো ছোঁয়ার হালকা আঘাতে সংগ্রহ করতে মধু।