ক্যাটারিংয়ের খাবার খেতে-খেতে --
জং ধরে গিয়েছিলো ভিতরের নাড়ীভুঁড়ি
নিজে রাঁধবো বলে হাতে তুলে নিয়েছিলাম ছুরি।
আলু, রসুন, লঙ্কা কেটে যখন কাটতে গিয়েছিলাম পিঁয়াজ
পিঁয়াজ জুড়ে দিলো শর্ত --
লোনাজলে যেনো না ভরে দুচোখের গর্ত।
মৃদু হেঁসে বলেছিলাম --
আমি অদম্য-দুর্দমনীয় চেঙ্গিস --
জল্লাদের মতো নিষ্ঠুর আমার এ প্রাণ --
তোকে আজ কেটে করবো খানখান।
ক্ষুরধার ছুরিতে যখন কেটেছিলাম পিঁয়াজের রান
অ্যামিনো এসিডের ধাক্কায় ভেঙে যায় মোর সমুদ্রের বান।
চোখের গর্ত জলে করেছিলো টইটম্বুর --
মনে হয়েছিলো জীবনতরী বুঝি এখনই ফেলবে নোঙর।
কাটা পিঁয়াজ, রসুন গরম তেলে ঢেলে --
দিয়েছিলাম পিঁয়াজ সমস্ত কড়াইয়ে মেলে।
মসলা দিতে করেছিলাম সার্ভেয়ারের মতো মাপঝোঁক
খোশবোতে মিটে গিয়েছিলো ভুখ --
যাঁরা খেয়েছিলো, পরদিন অনেকেরই হয়েছিলো অসুখ।
খেয়ে এতো সাধের রান্না
ইংলিশ কমোডে বসে করেছিলাম কান্না
লঙ্কাবাটার ঝালে জ্বলেছিলো বায়ুপথ।
নারীর রান্নাকে দ্যাখেছিলাম খাটো
রাঁধতে গিয়ে ধরেছিলো মোর হাঁটু।
গণিতবিদের মতো হিসাব কষে-কষে
মসলা দাও তুমি পিঁড়ির উপর বসে।
ক্লান্তিতা আসেনা তোমার নিরলস দেহে
রাঁধতে এতো কষ্ট বুঝতে পারিনি দ্যাখে।
পিঁয়াজ কাটতে গিয়ে নীরবে ঝরিয়েছো কতো সমুদ্র জল
পাশে দাড়িয়ে দেইনি কখনো বল।
খেয়ে নারীর হাতের সুস্বাদু রান্না
কর্মে আসে সফলতার বন্যা।
ফুরফুরে বাতাসের মতো প্রফুল্ল হৃদয়
হতে পারিনি কখনো তোমার প্রতি সদয়।
গরম কড়াই ধরে তুলতুলে হাতে ফেলেছিলে কড়
দ্যাখিনি কভু বিবেকের তরী দিয়ে ভর।
রাত্রিবেলা হাত থেকে যখন পেতাম রসুনবাটা গন্ধ
মনে-মনে অনেক করেছিলাম তোমায় গাল-মন্দ।
একহাতে দুধের শিশু,অন্যহাতে ঝরাও ভাতের ফ্যান
হজম করতে পারতামনা তোমার প্যান-প্যান।
সংসার স্বর্গের টুকরো, যদি করে নারী সদাচরণ
অসৎ আচরণে, জিন্দা থেকেও যেনো মরণ --
মনে হয় নরকের আগুনে পুড়ছে গা ---
এগোবার পথে কে যেনো আঁকড়ে ধরে পা।
নারী ছাড়া নর, নর ছাড়া নারী --
এ যেনো লবন ছাড়া তরকারি
প্রতিটি সংসারে নারী খুবই দরকারী
হে নারী, তোমায় পেয়ে আজ আমি অহংকারী।