প্রবাসীর কষ্ট প্রবাসী ছাড়া কেউ বুঝে-না
বারো ঘন্টা ডিউটি শেষে রুমে এসে যখন শুরু করি রান্না
কষ্টে ইচ্ছে করে করতে কান্না।
যেখানে সারাদিনের ক্লান্ত দেহটা বিছানায় এলানোর কথা
সেখানে হাজারো প্রবাসী ছুটে উপরি ইনকামের আশা
পরিবার-পরিজনের দিন যেনো না কাটে নিরাশা।
রান্নার ফাঁকে কথা বলে নেই ছেলে-মেয়ের সাথে
সোনা বউ অপেক্ষা থাকে কথা বলবে গভীর রাতে।
ক্যানো পাঠালে ভবে বানিয়ে পুরুষ --
তাজা রক্ত পানি করেও বেরোয় হাজার দোষ।
অসুস্থ থাকি, অনাহারে থাকি তা নাকি আমার ব্যাপার
মাস শেষে খরচাপাতি পাঠিয়ে দিতে হবে প্রিয়তমার ফরমাশ।
তাকাতে পারিনা বাপ-মায়ের মুখপানে
অসুস্থ মা পড়ে থাকেন গেরামের ঘরের এক কোণে
বউ আমার বালবাচ্চা লয়ে থাকেন শহরে
মাস না পেরুতেই বলে হাত তাঁর একদম খালি
স্মৃতি-প্রীতির প্রাইভেট, দুধ-ওয়ালীর দুধের দাম
আটমাস আগে চার মণ চাল কিনেছিলো --
এখন জলচৌকিতে দাঁড়িয়ে ড্রাম থেকে তুলতে হয়
ছেলে কাতরাচ্ছে তিব্র বোখারে --
প্রিয়তমা যেতে পারবে না কারোর দুয়ারে।
বাপ-মাকে দিতে পারিনা কানাকড়ি
বউ সবুজ শ্যামল গ্রাম ছেড়ে হয়েছে শহুরী
প্রবাস জীবনে বয়ে চলে ব্যথার লহরী।
প্রবাসীরা অর্জুন গাছের মতো --
পরিবার-পরিজনকে ভালো রাখতে,ভালো দ্যাখতে
নিজের যৌবন, টগবগে রক্ত বিলিয়ে দেয়।
নিজে পুরাতন কাপড় পড়ে ঈদ সেরে নেই
বাড়িতে টাকা পাঠায় নতুন জামাকাপড় কিনতে
নিজে বাসি খাবার খেয়ে বাড়িতে টাকা পাঠায় কোরবানির গরু কিনতে
এটাই প্রবাসীর ধর্ম,এটাই প্রবাসীর কর্ম,এটাই প্রবাসীর টান
তারপরও হাজারো পরিবার ভুল করে চিনতে
সুখের সারথি প্রিয়তমা ধুলোয় উড়ায় মান।
পেট দিয়েছে ভালো কথা, ক্ষুধা দিলো ক্যান খোদা
করতে হতোনা এতো লেনদেন,ঝরাতে হতোনা ঘাম
গরীবের রক্ত চুষতে পারতো না, কৃতদাস হতোনা কেউ
মানুষের থাকতো না এতো অহংকার,গগনচুম্বী দাম।
ছেড়ে আসতে হতোনা নিজ গাঁও,জন্মস্থান, জন্মভূমি
ছেড়ে যেতোনা প্রবাসীকে তাঁর সহধর্মিণী।