ঋতুটা ছিলো শরৎকাল, মাসটা বোধহয় আশ্বিন
উঠোনের কোনে ফুটেছিল সোনালু ফুল
কয়েকটি সবুজ পাতা ছিলো গাছের ডালে
মনে হ'য়ে ছিল কে যেন সোনা মেখে দিয়েছিল পুরো গাছে।
চীনালোঙ্গার বিল শাপলা আর শালুক ফুলে ছিল ঝিলমিল তার অদুরে ছিল পদ্মফুলের ঝিল
কোমর দুলিয়ে দোল খেয়ে ছিল কাশফুল
তার মাঝে লুকিয়ে ছিলো পল্লী বধূর কল্লোল।
কামিনী ফুলের ঘ্রাণ মাতিয়ে রেখেছিলো প্রাণ
পুরো বাড়ি ভর্তি ছিল তোমার বাপের বাড়ির  মেহমান, আনন্দের ঢেউ ছিলো তোমার হৃদয়ে
আমন ধানের সবুজ চারার উপর ঢেউ খেলে ছিল উদাসীন হাওয়া
এই বুজি প্রস্তুতি শেষ হলো তোমার যাওয়ার।
পড়ন্ত বিকেল সাদা মেঘের টুকরো গুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল আকাশ
শঙ্খচিল খেলা করছিল মেঘের সাথে
কোন কথা নেই, বার্তা নেই, চলে গেলে মেহমানের সাথে
আর ফিরে এলে না, একটি বার খোঁজও নিলে না।
তুমি নেই, তোমার স্মৃতির বসত ছিলো চারপাশে
উঠোনের কোনে জাম্বুরা গাছের পাশে সোনালু গাছটিও আর নেই
আমার স্বপ্নগুলোর মতো, আমার আশা গুলোর মতো
কালবৈশাখীর ঝড়ে দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছিলোটি।
তুমি চলে যাওয়ার সময় উঠোনের উত্তর পাশে
তোমার মেয়ের মতো ছোট্ট একটি সোনালু গাছ ছিলো
হয়তো তোমার নজরে কোনদিন পড়েনি
এই দশ বছরে গাছটি অনেক বড় হয়েছে, অনেক ফুল ফুটে, তোমার মেয়ে এই সোনালু ফুল দিয়ে খেলা করে।