আমি সবসময় ভাবতাম
যাকে আমি ভালোবেসে জীবনসঙ্গী করবো
সে আমাকে সাপোর্ট দিবে সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে এগিয়ে যেতে।
এক টুকরো মেঘের মতো সবসময় ছায়া দিবে মাথার উপর
স্নিগ্ধ ভোরের কুয়াশা ভেজা সকালের মতো মনে হবে তপ্ত দুপুর!
আমাকে অন্যায় ভাবে কেউ কিছু বললে সে প্রতিবাদ করবে
আমার পাশে রুখে দাড়িয়ে ভরসা দিবে।
আমি ভাবতাম সে এসে
পেছন থেকে আমার অন্তর্বাসের হুক লাগিয়ে শাড়ীতে কুচি তুলে দিবে
ভুল জায়গায় বসালে ঠিক করে দিবে কপালের টিপ।
স্বপ্ন কখনো পূর্ণতা পায়না
তাঁকে পেয়েছিলাম ঠিকই কোন এক হেমন্তে
কিন্তু ভাবনাগুলো তার মাঝে পাইনি
মন খোলে কখনো কোন কথা বলতে পারিনি।
আমি ছিলাম তার ভোগের সামগ্রী
কখনো অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে সে আমায় দেখেনি
রাতের প্রয়োজন মিটে যাওয়ার পর ধাক্কা দিয়ে চৌকির একপাশে ঠেলে
অপরদিকে মুখ ফিরিয়ে ঘুমিয়ে যেতো।
আমি কখনো তার কাছে মুখ ফুটে কিচ্ছু চাইনি
সে-ও কখনো জানতে চায়নি আমার কিচ্ছু লাগবে কিনা!
বিয়ের পর তো একটি মেয়ের অনেক কিছুই লাগে
সেইদিকে তার কোন খেয়ালই ছিলোনা
আমি বাপের বাড়ি বেড়াতে গেলে প্যান্টি এবং বক্ষবন্ধনী নিয়ে আসতাম।
বিয়ের আগে যতটা খেয়াল রেখেছিলো
বিয়ের পর দশভাগও রাখেনি
আমাকে সঙ্গে নিয়ে সে কখনো উঠোন পার হয়নি।
স্ত্রীর জন্য স্বামী নাকি বটবৃক্ষের মতো
ধেয়ে আসা সকল ঝড়-ঝাপটা প্রতিরোধে বুক পেতে দেয়
কৈ, আমি তো একদিনও দেখিনি তাকে
আমার উপর বয়ে যাওয়া ঝড় মোকাবেলা করতে
প্রতিরোধের আশায় তাল গাছের মতো খুঁটি হয়ে দাঁড়াতে।
আমি যখন আমার বান্ধবীদের মুখে তাদের স্বামীদের প্রশংসা শুনি
তাদেরকে টেককেয়ার করার তারিফ শুনি
নিজের উপর নিজের ঘৃন্যা হয় -
কি দেখে আমি ভালোবেসেছিলাম কাপুরুষের মতো একটি মানুষকে।
আঘাতে আঘাতে ভাঙে হৃদয়ের তীর
শব্দহীন ভাবে কেবলই ভাঙে!
মানুষ এতোটা নির্দয় হতে পারে কখনো কল্পনাও করিনি।
একটা মানুষের সাথে আমৃত্যু বসবাস করেও তার প্রকৃত রুপটা ধরা যায়না
হওয়া যায়না তার মনের মতো
চোখের পলকে বদলে যায়, পরিবর্তন করে নেয় খোলস।
আমার স্বপ্নগুলো আজও নীড় খোঁজে পায়নি
শঙ্খচিলের মতো আকাশে উড়ে রোদে পুড়ে
কখনো কখনো পালকের মতো ঝরে পড়ে পলেস্তার।
অনেক নারীকেই দেখেছি তাদের স্বামীদের ময়না পাখির মতো পুষ মানিয়ে নিতে
আমারটা ছিলো বাউণ্ডুলে, একরোখা
বিয়ের পর একটি কথাও শোনাতে পারিনি তাকে
সে কখনো বুঝতে পারেনি আমাকে।
দিনের বেলা নির্জনে একদিনও তাকে কাছে পাইনি
সারাদিন টইটই করে ঘুরে বেড়াতো
হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল এমনকি সন্ধ্যা পাখিরা নীড়ে ফিরে এলেও
তার মাঝে কোন তাড়া থাকতো না নীড়ে ফেরার।
প্রতিটি নারী একটু রোমাঞ্চ,শিহরণ চায়
তার মাঝে আমি কোন রোমান্টিকতা দেখিনি
পেছন থেকে জরিয়ে ধরে একদিনও বলেনি
"প্রিয়তমা, আমি তোমাকে ভালোবাসি "!
সারারাত রোবটের মতো শুয়ে শুয়ে পার করতো
আমার মিলনের সাধ ছিলো অর্থহীন
কেবল তার সাধ জাগলেই খামচে ধরতো আমার স্তন আর ঠোঁট।
পিতামাতার নিষেধ পায়ে পিষে
নিজের সিদ্ধান্তকে প্রাধান্য দিয়ে বুঝতে পেরেছি
কি ভুল করেছিলাম সেইদিন,ঘৃন্যা হচ্ছে নিজের উপর
ঘৃন্যা হচ্ছে সেইসব পুরুষদের উপর যারা মুখোশের আড়ালে মুখ লুকিয়ে রাখে।