ছিলাম আমি এমন পোলা
বাবার কান্ধে জোয়াল থাকতে খাইনি কখনো শোলা।
মা যেদিন রাঁধতো ঘরে --
মুখী-পঞ্চমুখী-ওল-মান কিংবা লতি--
বদলে দিতাম মায়ের চৌদ্দ গোষ্ঠীর গতি--
কি'বা দোষ ছিলো তাঁর, এনেছে যে তাঁর পতি।
ভাতের প্লেট, পানির গ্লাস ভেঙেছি যে কতো
ভাঙিস-নে বাপ, ভাঙিস-নে বাপ বলে হাত ধরে মা কেঁদেছেন শত।
নিয়েছি যখন জোয়াল কাঁধে, ধরেছি যখন হাল
এই বুঝি ছিঁড়ে যায়, এই বুঝি ছিঁড়ে যায় পাল।
দক্ষ মাঝি হয়েও বাবা খেয়েছেন হিমশিম
আশার প্রদীপ জ্বলে আমার টিমটিম।
পরের মাথায় কাঁঠাল রেখে খেতে ভারী স্বাদ
সামলাতে গিয়ে সংসার ভেঙে যাচ্ছে মোর দাঁত।
বাছবিচার করিনা আর মূলা কিংবা শোলা
মুখী-পঞ্চমুখী-ওল-মান রাঁধি জ্বালিয়ে চুলা।
যেইদিন নির্বোধের মতো করেছি গত --
মনে হলে হই লজ্জিত,শেষার্ধে বিবেক হলো বুঝি উজ্জীবিত।
গ্রীবায় আর ধরে না সুড়সুড়ানি --
এখন আমি খাই যখন মুখী-পঞ্চমুখী-ওল।
বাপের কান্ধে জোয়াল থাকতে করেছিলাম যে ভুল
প্রবাসে রাঁধতে গিয়ে মোর বুকে বিঁধে শূল।
সাংসারিক খরচ অধিক হওয়ার ভয়ে
সাধ থাকলেও সাধ্য নেই মাছ মাংসের তরে।
আমার এ শির নত করি বাবা তোমার পদতলে
নিজের কষ্ট হলেও জীবন দিয়েছো মোদের ফুলফলে ভরে।