দক্ষিণা বাতায়নটা খোলা, ঝিরঝির বাতাস বইছে
ধবধবে আকাশ, খুব সুন্দর ঝলমলে চাঁদের আলো
দূরে কোথায় যেন কামিনী ফুল ফুটেছে,
ফুলের ঘ্রাণ দক্ষিণা সমীরণে ভাসতে ভাসতে একেবারে আমার বদ্ধ ঘরে
খুব মিষ্টি ঘ্রাণ, শ্বাস নিতে খুব কষ্ট হচ্ছে
তারপরও ঘ্রাণটাকে প্রিয়ার আলতো ছোঁয়ার মতো অনুভব করছি
মাগরিবের সালাতের সেজদায় যাওয়ার পর
সোঁজা হয়ে দাঁড়াতে খুব কষ্ট হয়েছিল
বুকের ডানপাশে কি যেন খামচে ধরেছিল।
পাশে কেউ নেই, কেউ নেই
একেলা ঘরে একলা একা, মরুভূমির উত্তপ্ত তাপ
নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে, খুব একলা লাগছে
মনে হচ্ছে আর দেখতে পারবো না তিতাস নদীর ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ
আর শুনতে পারবো না গোধূলির পাখির কলতান
হয়তো এই মরুর দেশেই রচিত হবে আত্মার সংবিধান।
বুকের ব্যথাটা খুব যন্ত্রণা দিচ্ছে, বৃদ্ধি পাচ্ছে তীব্রতা
বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা সংকীর্ণ হতে হতে এতোটাই সংকীর্ণ হয়েছে স্নিগ্ধ ভোরের এক ফোঁটা শিশিরের সমান।
ভেতরে খুব আঘাত করছে, মনে হচ্ছে চিত্তের পাঁজর গুলো ভেঙে খাঁচার পাখি বেড়িয়ে আসতে চাচ্ছে
চলে যেতে চাচ্ছে আপন বেশে আপন দেশে।
স্মৃতি এবং প্রীতির মুখখানি খুব মনে পড়ছে
মায়াবী চোখে তাকিয়ে আছে, আহ্ কি নিষ্পাপ মুখ
এ দু'টো মুখ ছিলো আমার সুখ।
বাবাকে দেখি না বহু বছর
শুনেছি বাবাও নাকি অসুস্থ,
গাধা গাধা ঔষধ না খেলে চলতে পারেন না
আগের মতো খাবারও খেতে পারেন না
খুব মনে পড়ে বাবাকে, খুব মনে পড়ে।
চৌকির ওপাশের দেয়ালে ঝুলানো ঘড়ির কাটা টিকটিক করে ঘুরছে
আর বলছে টিকিট কাঁটার আয়োজন চলছে, প্রস্তুতি নিতে
খুব সাধছিল তোমাকে একটি বার কাছ থেকে দেখার
মুখোমুখি বসে একটু গল্প করার,
চোখের উপর চোখ রেখে নিজেকে তোমার চেখের ভিতর দেখার।
সাধছিলো তোমাকে নিয়ে গাঁয়ের এলোমেলো পথ ধরে হারিয়ে যাবার
বুকের উপর মাথা ঠেকিয়ে খোলা আকাশ দেখার
মুক্ত বাতাসে চিত্ত পূর্ণ করার
সাধ ছিলো বুকের উপর মাথা রেখে মৃত্যুর শরাব পান করার।