আমি বৃদ্ধে উপনীত হয়েছি
সংসার_সমাজ দায়মুক্তি দিয়েছে
দেহে শক্তি নেই_যৌবন নেই
গায়ের চামড়া ঢিলেঢালা হয়ে ভাঁজ পড়ে গিয়েছে।


ছেলে_মেয়েকে ব্যবসা বুঝিয়ে দেওয়া পর
যে যার_যার মতো প্রতিষ্ঠিত
চুল_দাড়ি সাদা হয়ে গিয়েছে বিধায়
হয়ে গিয়েছি সকলের অবহেলিত।


যাদের জন্য আমার এই বাড়ি উন্মুক্ত ছিলো
উন্মুক্ত ছিলো একাউন্ট
তাদের বাড়ি আজ আমার জন্য উন্মুক্ত নয়
চা-পানের জন্য পাঁচ দশ টাকা চেয়ে নিতে হয়।


ছেলে_মেয়েদের মন প্রফুল্ল রাখতে
এই বৃদ্ধ বয়সেও কতো কিছু করতে হয়
নাতি_নাতনির কাছে ঘোড়া হয়ে
পুরো বাড়ি ঘুরতে হয়_আনন্দ দিতে হয়_খেলতে হয়।


তাদেরকে আমি যেখানে রেখে বড় করেছি
আমার জায়গা তাদের ঘরের সেখানে হয়নি
কিচেন রুমের সাথে ছোট্ট একটি রুম_পুরনো রং
মাঝেমধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসতে চায়_বাহিরের আবর্জনা পঁচা দুর্গন্ধে।


কতো যত্ন করে বড়ো করেছি
নিজে কষ্ট করে হলেও পূর্ণ করেছি আবদার
সবার খানাপিনা শেষ না হলে
তাদের মা_ও খেতো না কোন খাবার।


ওদের হিসাব_নিকাশ বুঝিয়ে দেওয়ার আগ পর্যন্ত
এক সাথেই ছিলো তাদের মা
হিসাব বুঝে নিয়েই হিসাবি হয়ে গিয়েছে
এক সাথে থাকায় খরচা-টাও বেড়ে গিয়েছে।


তারা ব্যবসার হিসাবে এতোটাই দক্ষ হয়েছিলো
আমাদেরকেও ব্যবসায়ী পণ্য ভেবে নিয়েছিলো
চার ছেলে তিনমাস করে ভাগাভাগি করে
আমাকে দিলো একদলে_তাদের মাকে দিলো অন্যদলে।


আজ খুব মনে পড়ছে তাদের মা'কে
অনেক বছর হলো দেখিনা
কেন জানি হৃদয়টা চৈত্রের শুকনো জমির মতো খাঁখাঁ করছে
বিরানভূমির মতো পুড়ে যাচ্ছে।


আমি দৈহিক বৃদ্ধ হলেও মনোবল আঠারো বছরের যুবকের মতো
হাতে কলম নিলে এখনো নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারি
ক্ষমতার গদিতে বসা লোকের গদি একটুখানি হলেও নড়াতে পারি
কলম থেকে সৃষ্ট বুলেটে আহত করতে পারি।