গাঁয়ের ছোট চায়ের দোকানগুলো অলস মাতব্বরদের সংসদ
সকাল এবং সন্ধ্যা এখানে বসে তারা আইন চর্চা করে।
কার বৌয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে দিলো না --
মাতব্বরকে দ্যাখেও কার ছেলে সালাম দিলো না
চলন্ত সাইকেল থেকে নেমে ক্যানো দ্যাখালো না সম্মান।
এই মাতব্বরদের খেয়েদেয়ে কোন কাজ নেই --
বিজ্ঞানীদের মতো এঁরাও রিসার্চ করে --
কার মেয়ে বেপরোয়া, উড়নচণ্ডী --
কে পেরিয়ে গেলো তাদের চোখের গণ্ডী।
এঁরা খুব দক্ষ ছোট ইস্যুকে বেলুনের মতো বড়ো করতে
নিরপরাধীকে অপরাধী আর অপরাধীকে নির্দোষ সাব্যস্ত করতে
চায়ের দোকানগুলো এখন তাদের রিসার্চ ইনস্টিটিউট।
তারা বিভিন্ন বিষয়ের উপর গবেষণা করে --
কোন ছেলেটি রাস্তার পাশে দাড়িয়ে প্রস্রাব করলো
লুকিয়ে লুকিয়ে কে সিগারেট খেলো --
কে জায়নামাজে দাড়িয়ে জোরে আমিন বললো --
আবার কে হাত বাঁধলো বুকের উপর।
এঁদের মুখ থেকে প্রশংসা কুড়ানো তিনপুরুষের ভাগ্য
প্রশংসার চেয়ে পরনিন্দা আর সমালোচনাতে-ই এঁরা পারদর্শী।
নির্বাচন এলে তো আর কোন কথাই নেই --
পুরো গাঁও বেচে দেয় প্রার্থীর নিকট --
কয়েকটি টাকা পকেটে পুরতে পারলেই হলো --
পাল্টে যায় কথার ভঙ্গিমা,চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে
চিবিয়ে-চিবিয়ে,রসিয়ে-রসিয়ে কথা বলেন।
অলস মস্তিষ্ক নাকি শয়তানের কারখানা --
গাঁয়ের চায়ের দোকানগুলো এখন পান্ডাদের বালাখানা
মোড়লরা মোড়ালি করেন এই বালাখানা বসে।
কথা কেনাবেচা করার দুমুখো সাপেরও অভাব নেই
জালের মতো বিছিয়ে আছে মীরজাফর --
ওঁরা যেকোনো সময় বিবস্ত্র করতে পারে
খোলে নিতে পারে গায়ের কাপড়।
হাজারো মাতব্বরের ছেলেপুলে সম্পৃক্ত অপরাধে
মেল বসেনি একটিও তাদের তরে --
তাদের অপকর্ম, অপরাধের করলে প্রতিবাদ --
মাতব্বরের ইজ্জতের উপর আসে আঘাত।
দফায় দফায় বসে মেল,হুমকি ধামকি খাটাবে জেল
এতো হিম্মত কোথা থেকে আসে --
মোড়লের ছেলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ভাসে।
প্রতিবাদকারীকে যদি না পায় নাগাল
গার্ডিয়ান ডেকে এনে করে নাজেহাল
শিক্ষিতরা দ্যাখে করে হা মূর্খ মাতব্বরের সালিশ
ঘুণে ধরা সমাজ,কোথায় করবো নালিশ।
রাত্রিতে শয্যাসঙ্গী পতিতার --
সূর্যালোকে সাধু, দখল করে মসজিদের প্রথম কাতার।
গাঁয়ের সংসদে কিছুক্ষণ বসে থাকলে বুঝা যায়
জ্ঞানীদের জ্ঞানগর্ভ কথা --
শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া, জো-বাইডেন, এরদোয়ান, ইমরান খান, ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষমতা যেনো অলস মোড়লদের হাতের মুঠোয়
একজনকে ক্ষমতাচ্যুত করে চোখের পলকে
আরেকজনকে ক্ষমতার রাজমুকুট পরিয়ে দিচ্ছে
মৃত্যুর পরও তাদের হিংস্র থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা শেখ মুজিব, জিয়াউর রহমান --
যুগের পর যুগ এই রীতি বহমান।
আক্কেল ছাড়া শিক্ষিত বেকুফ গুলো --
মূর্খ মোড়লদের তাবেদারী করে, পা চাটে --
আর শিক্ষিতরা তাদের হুজুর হুজুর বলে সম্ভোধন করে।
শুনে রেখো মোড়ল --
করতে এসোনা সত্যের বিপক্ষে, মিথ্যের পক্ষে মোড়ালি
ছিটকে ফেলবো বহুদূর ধরে তোমার গোড়ালি।