তপ্ত দুপুর
সূর্যটা মাথার একদম উপর
কাঠফাটা রোদ, ঘর্মাক্ত শরীর, ক্লান্ত দেহ।
দুপুর বারোটা থেকে একটা পর্যন্ত লান্স টাইম
অফিস থেকে এই তপ্ত রোদে পায়ে হেঁটে খেতে গিয়ে দ্যাখি
রাতের রান্না করা ডালে --
কয়েকটি ককরোজ পড়ে মরে আছে
কি করবো ভাবছিলাম --
ফেলে দেবো,ফেলে দিলে তো উপোস থাকতে হবে।
হঠাৎ চোখের সামনে ভেসে উঠলো
বস্তির মানুষের জনজীবনের নিদারুণ দৃশ্য
ফুটপাতের শিশুগুলির ক্ষুধার্ত মুখ।
আমি দ্যাখেছি মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই
মানুষ সাপ,চিল,শকুন, কুকুরের মুখ থেকে খাবার কেঁড়ে নিয়ে খেয়ে বেঁচে থাকে
হাজারো মানুষ ডাস্টবিন থেকে খাবার কুড়িয়ে কুড়িয়ে খেয়ে দিনাতিপাত করে
কৈ, ওঁদের তো মরতে দ্যাখিনি, কখনো শুনিনি
ডায়রিয়া হয়ে শুয়ে আছে হাসপাতালের বেডে।
আমিও চামচ দিয়ে আলতোভাবে ককরোজ গুলো তুলে বেসিনে ফেলে
ডালটা হাল্কা গরম করে আলুভর্তা দিয়ে উদর পুর্তি করে নিলাম।
যখন বয়স তেরো-চৌদ্দ ছিলো
ভাতে মরা ভাত কিংবা কালো কেশ পেলে
খাবার টেবিল থেকে ভাতের প্লেট শূন্যে উড়তো
লাটিমের মতো ভনভনিয়ে ঘুরতো।
আর এখন বয়সটা যখন চল্লিশ ছুঁইছুঁই
ভাত-ডাল কিংবা সালুনে --
আরশোলা কিংবা টিকটিকি পড়ে থাকলেও --
কিচ্ছু দ্যাখিনি বলে গাপুসগুপুস খেয়ে ফেলি।
মায়ের মনে দিয়েছিলাম কতো আঘাত
মা বলতেন কিচ্ছু হবেনা বাবা খেয়ে-নে ভাত।
দায়িত্ব এমন একটা জিনিস --
যখন নিজের কাঁধে বর্তায় তখন অনেক কিছু মেনে নিতে হয়।