প্রিয় কবি!
তুমি আজ বেঁচে থাকলে তোমার পায়ের ধুলি গায়ে মেখে নিতাম
কতো ঝড়-ঝঞ্ঝা তোমার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছিল
ভেঙে যাওয়া তো দুরের কথা, একটু নোয়াতেও পারেনি।
যাকে ভালোবেসে ছিলে প্রাণের চেয়েও বেশী
সেই প্রিয়তমার একটি কথায় রক্ত ক্ষরণ করেছিলো তোমার হৃদয়ে
তাঁর প্রাসাদ ছেড়ে গিয়েছিলে নীরবে-নির্ভয়ে
আর কক্ষনো ঘেঁষোনি তার ত্রি-সীমানা।
বদ্ধ ঘরে না থেকে জগৎ দ্যাখা যাঁর নেশা
নিপীড়িত,নির্যাতিত,মজলুমের পক্ষে কলম ধরা যাঁর পেশা
তাঁকে কি করে আঁটকে রাখা যায় --
কি করে বেঁধে রাখা যায় বিনি সুতোয়।
তুমি কাঁপিয়েছিলে অবৈধ শাসক, শোষক, শোষনের ভীত
তারা দ্যাখেছিলো তোমার সুনিশ্চিত জিত।
দক্ষিণা বাতাসে ওঁরা শুনতে পেয়েছিলো -
আনন্দময়ীর আগমনী গানে তোমার কৈফিয়ৎ!
ক্ষেপে গিয়ে পুরে দিলো জেলে --
কারার ঐ লৌহকপাট ভেঙে, ডানা দিলে মুক্ত আকাশে মেলে।
প্রিয়তমা হারা,হৃদয়ের স্পন্দন বুলবুল হারা কষ্ট বুকে চেপে --
পৃথিবীর জন্য সৃষ্টি করে গেলে যুগবাণী, সর্বহারা
সব হারিয়ে আর কিচ্ছু হারাবার ভয় ছিলোনা তোমার।
তুমি পড়েছিলে ব্রিটিশদের রোষানলে --
আর আমি পড়েছি সমাজপতিদের--
ওঁরা আমাকে হাজত আর মৃত্যুর ভয় দ্যাখায় --
সত্যবাদীরা তো একবার-ই মরে
তুমি প্রজন্মকে শিখিয়ে গেলে কিভাবে সত্যের শির উঁচু রাখতে হয়
কিভাবে নিশান ধরে রাখতে হয়।
আমার প্রিয়তমা আমাকে ছেড়ে যাওয়ার পর
আমি বুঝতে পেরেছিলাম হৃদয় ভাঙ্গার কষ্ট
ভালোবাসার মানুষকে ভুলে থাকা কতোটা যন্ত্রণার
আমি প্রতিটি পলে-পলে টের পাচ্ছি।
তুমি আমার ভালোবাসার কবি --
তুমি বীর পুরুষ --
তোমার মতো সুপুরুষ হাজার বছরে একজন আবির্ভূত হয় পৃথিবীতে
অভাব-অনটন, নিপীড়ন-নির্যাতন রুখতে পারেনি তোমার দুর্দমনীয় গতিকে।