হালকা বাতাস বইছে,
এক কাপ চা হাতে বসে আছি রুবেল ভাইয়ের দোকানে,
হবিবুর হলের সামনে, শীত আসন্ন,
যাদের আসার কথা তারা এখনো আসেনি।
কাল ছুটির দিন, রাত্রে ছাদে গান হবে।
মন কিছুটা আনন্দ উদাসে ভরপুর।


পাতা ঝরে যাওয়ার সংবাদ নিয়ে আসে শীতের বাতাস।
চোখ বন্ধ করলে মামার বাড়ির কথাও মনে পড়ে।
বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে বেড়াতে যেতাম ।
কত বন্ধু বান্ধব ছিল সেখানে,
কে কোথায় এখন জানি না।


একটা স্বপ্নের কথা মনে পড়ে,
শুয়ে আছি বিছানায়,
আস্তে আস্তে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে।
এখন চোখ খুললেও কিছুই আর দেখি না।
পঞ্চ ইন্দ্রিয় দ্রুত অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে,
নাক দিয়ে ঘ্রাণ, ত্বক দিয়ে অনুভবও টের পাচ্ছি না।
কান দিয়ে শব্দ এমনকি জিহ্বা দিয়ে
লালার রসও টের পাচ্ছি না।
এখন আমার কাছে শুধু স্মৃতিই অবশিষ্ট,
আর জাগরিত মন।


বাবু ভাইয়ের দোকানে খাবারের জন্য ভীড় জমেছে,
ক্লাস শেষে কিছু ছেলে মেয়ে ঘুরতে বের হয়েছে,
আমরাও একসময় বের হতাম।
এখন আমার সমস্ত ক্লাস শেষ।


একজন ভাই বয়সে ছোট, "দাদা!" বলে হাত নেড়ে চলে গেল।
আমিও হাসিমুখে সায় দিলাম।


অপেক্ষায় আছি কে কখন আসবে।
হঠাৎ এক ফুরফুরে বাতাস বয়ে যায়।
এক বুক শূন্যতা বুকে নিয়ে।


চোখ বন্ধ করলাম আমি,
জাগরিত মনে স্মৃতি ভেসে আসে,
আমি চলে যাচ্ছি এই পাতাঝরা শীতের বাতাসের সাথে
মামার বাড়ির খোলা লবনের প্রান্তরে,
অথবা ঘুড়ি উড়াতে চলে যাচ্ছি নিজের এলাকায়
সেই দুরন্ত শৈশবে,
বাসায় স্যার আসছে বলে মা আমায় খুঁজতে আসবে মাঠে।
খেলা তখনও আমার শেষ হয়নি জানি,
তবুও দৌড়াতে দৌড়াতে বাড়ি ফিরব,
আর এভাবে আমি ছুটতে থাকব
এখান থেকে সেখানে,
এক জীবন থেকে অন্য জীবনে।


[ক্যাম্পাসের শেষ দিনগুলো]