অপরাজিতা আমার,
বহু প্রতীক্ষিত সময় হঠাৎ।
মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনলাম আমার ফেলে আসা যত অভিমান
তোমায় এক বিষাক্ত নীলিমা দেয়ার গল্প
গল্পের পেছনের লুকায়িত সত্য,
বিষন্ন বদনে তোমার চলে যাওয়ার গল্প
আর আমার চূড়ান্ত অক্ষমতা!
বিষন্ন বদন ছেড়ে চওড়া ঠোটে
উড়িয়ে দিলাম শান্তির পায়রা,
উড়ুক তারা নির্বিবাদে
শহরতলী আর গ্রামান্তরে।
রাজ্যহারা রাজার মত অসহায় যেন!
চারপাশে মুহুর্মুহু গুলির আওয়াজ
আধুনিক মারণাস্ত্র,
রাজ্য দখলে মরিয়া একদল মানুষ
বুনো উল্লাসে চলছে রক্তে হোলি খেলা!
সর্বশক্তি নিয়ে তারা এসেছে আমার রাজ্য দখলে!
তবুও ঠায় দাঁড়িয়ে আমি,
অথচ আমাকে দখল করে নি কেও!
আমার মস্তক ছিন্ন করে রাজ্য দখল তাঁদের অভিলাষ নয়,
কারণ,
তাতেই যে আমার মুক্তি।
আর শত্রুপক্ষ কেনই বা আমাকে মুক্তি দিবে বলো?
শত্রুপক্ষের আক্রমণের খবর যখন প্রাসাদে এলো
আমি ব্যস্ত ছিলাম তোমায় নিয়ে কাব্য সাধনায়!
'একটি লাইব্রেরি
দু'টি চেয়ার মুখোমুখি
জ্যোৎস্না রাত
চায়ের কাপ'
আরও কত কি!
ওরা এলো,
টেনে হিঁচড়ে নামালো আমায়
নিমিষেই জ্বালিয়ে দিলো; কাব্য আর তোমার পত্র যত!
তোমার লেখা শেষ পত্রটি এসেছে তার কিছুক্ষণ আগে
নীল খামে মোড়ানো আর প্রাপকের নামে।
জানিনা কি লিখেছিলে প্রিয়তমা!
জ্বালিয়ে দিল ওরা বিপুল উল্লাসে; বুনো ষাড়ের মত লাফিয়ে।
অসহায়ের মত দাঁড়িয়ে দেখলাম,
চিঠিগুলো পুড়ে কেমন ছাই হয়ে গেল নিমিষেই!
খবর এলো,
নাঙ্গা তলোয়ার হাতে যুদ্ধ ময়দানে তুমি!
এগুতে চাইলাম তোমার দিকে
রাইফেল আর বেয়নেটের কাছে তোমার এ সমর কি শোভা পায়!
জানিনা কি এক আবেদন মোহাবিষ্ট করে ফেললো আমায়
বেঁচে থাকার তীব্র আকুলতার কাছে হেরে গেলাম আমি,
বুক ঝাঁঝরা হলো তোমার!
স্বার্থপরের মত বেঁচে রইলাম কেবল
কবিতা আঁকড়ে ধরে!
প্রিয়তমা আমার,
আর লিখব না তোমায় নিয়ে কখনোই
আর গাইব না বসন্তের মাতাল হাওয়ায়
ফিরব না আর কোন অভিমানে।
রাজ্য ছেড়েছি,
কবিতা ছেড়েছি,
ছাড়তে পারি নি কেবল তোমায়!