আর ফিরব না বলে কথা দিয়েছিলাম।
যখনি বলেছিলাম আর ফিরবো না,
তখনি আমি ফিরেছি দ্বিগুণ ভালবেসে।
আমি ফিরে এসেছি তোমার ভালবাসায়
আমাকে ফিরিয়েছে তোমার কণ্ঠস্বর
আমাকে ফিরিয়েছে তোমার অবনত দৃষ্টি।
আমি বলেছিলাম আমি আর আসব না।
অথচ আমি এসেছি বারবার নিজেকে তুষ্ট করতে।
আমি এসেছি তোমার দু'চোখের আহবানে
আমি এসেছি তোমার বাহুর আলিঙ্গনে।
তোমাকে বলেছিলাম আমার ভিতরের কথা
তোমাকে বলেছিলাম আমার দুর্বলতার কথা
তোমাকে বলেছিলাম আমার স্বপ্নের কথা
তার চেয়েও বেশি বলেছিলাম আমার অদূর ভবিষ্যতের কথা।
বলেছিলাম দূর্বার শিশিরে হাসিমুখে মরতে পারি
এক জ্যোৎস্না রাতে আকাশের দিকে তাঁকিয়ে আমি মরে যেতে পারি
আমি মরে যেতে পারি ভুট্টার স্বর্ণালী আবরণে
আমি আনন্দে মরে যেতে পারি একটি চড়ুই পাখির অবমুক্তিতে,
আমি মরে যেতে পারি তোমার দু'চোখের ইশারায়
আমি নির্ঘাত মরে যেতে পারি তোমার মুক্তোঝরা হাসিতে।
আমি স্বপ্ন দেখতাম ভোরের শিশির,
আমি স্বপ্ন দেখতাম দূরের কাশবন
যেখানে আনন্দনৃত্যে উদ্বেল একজোড়া ফড়িং।
বলেছিলাম আমি ফিরে আসব বর্ষার টিনের চালে
আমি ফিরে আসব জানালার ফাঁকে
বর্ষার কদমফুলে আর হিমেল হাওয়ায়।
তোমাকে বলেছিলাম আমার বিকলাঙ্গ মনের কথা
তোমাকে বলেছিলাম আমার ঝলসে যাওয়া হৃদয়ের কথা
তোমাকে বলেছিলাম আমার দুর্দিনে চরম অক্ষমতার কথা!
বলেছিলাম আমার লালিত স্বপ্নের ইতিহাস
বলেছিলাম তল্লাটের সবচেয়ে নিরীহ মানুষটির কথা
বলেছিলাম সবচেয়ে আস্তাকুড়ে যাওয়া এক মাস্তানের কথা
বলেছিলাম স্কুল শিক্ষকের এক করুণ ইতিহাস।
সবকিছু বলার পরও কেন ফিরে ফিরে আসি?
সব গল্প শেষে কেন চুপিসারে থেকে যায় কিছু বাকি?
কেন অসহায়ত্ব খুবলে খাওয়া চোখে তুমি জেগে থাকো রাতের পর রাত!
আসব না জেনেও কেন বসো স্মৃতির ঝাঁপি খুলে?
আর কতটা জানার পর তুমি তৃপ্ত হবে প্রিয়তমা!
আর কতটা আঁধারে তুমি ডুকরে কাঁদবে একা?
যে চাঁদ নিভে গেছে ইশ্বরের আদেশে
যে রেখা মুছে গেছে চিরতরে
সে চাঁদের আলোর স্বপ্ন আর দেখো না।
বালির বাঁধ ভেঙে গেছে সমুদ্রের ঢেউয়ে
স্বপ্নের ঘরে সিঁধ কেটেছে চোরে
মুন্ডুহীন আমি দেখেছি শুধুই চেয়ে!
অথচ আজও তুমি বেঁচে থাকো আমার পথ চেয়ে!
আজও তোমার মনের ভেতর তুমি থাকো না!
মধ্যরাতের বৃষ্টির শব্দে জানালায় বসো তুমি
তোমার বুকে কেবল বাড়ে দীর্ঘশ্বাসের সারি!
আমার রক্ত-মাংসের জন্য আর অপেক্ষায় থেকো না, প্রিয়তমা।
ধরে রেখো কেবল বুকের গভীরে
প্রতি নিশ্বাসে; ভালবাসায়