“ভুট্টো কয় ভাই টিক্কা খান, চল যাইগা পাকিস্তান।
কী চমৎকার দেহা গ্যাছে, বঙ্গবন্ধু আইসা গ্যাছে।
তাজমহলের সুন্দর ছবি, ভিত্রে ঘুমায় মমতাজ বিবি।”


কেউ বায়স্কোপ দেখে থাকলে মনে থাকার কথা।
বায়স্কোপঅলা খঞ্জনি বাজিয়ে নেচে নেচে
সুর করে বলছে, আর লোহার হ্যান্ডেল টেনে
ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে একটার পর একটা ছবি চোখের
সামনে তুলে ধরছে। শিশুরা বায়স্কোপের চোখে
চোখ লাগিয়ে দেখছে। বিনিময়ে চার আনা পয়সা
অথবা এক বাটি চাল ঝোলায় ঢেলে বায়স্কোপঅলা
মহা খুশি।


সেই মজার বায়স্কোপ দেখি না প্রায় পঁয়ত্রিশ বছর।
ছেলেবেলার অনেক স্মৃতিই ঢেকে গেছে মলিন
ধূলার আস্তরে। ভুলে গেছি অনেক কথা। তবু
বায়স্কোপ দেখার কথা ভুলতে পারিনি। কেননা
বায়স্কোপের তামাশার ছবিগুলো কাঠের বাক্স
ভেঙ্গে বেড়িয়ে গেছে। পাল্টে গেছে তামাশার
দৃশ্যপট। নির্মল আনন্দ, বিকৃত কামনার জলে
ভেসে গেছে সেই কবে।
গ্রাম কিংবা শহর, বাড়ি কিংবা সভ্যতার পথে
চলন্ত বাস, সমাজের সর্বত্রই দেখছি খুন, ধর্ষণ,
নির্যাতনের উন্মত্ত তামাশার বায়স্কোপ।
কাঠের বাক্স নেই, খঞ্জনির বাজনা নেই,
চার আনার সিকিও নেই; তবু রয়ে গেছে
ছোট্ট জীবনের বড় পর্দায় বেদনার বায়স্কোপ!
১০-৪-২০১৮