পঁচিশে মার্চ ঊনিশশত একাত্তর
অপারেশন সার্চলাইট নামে
শহরের বুকে ভারী ট্যাঙ্ক নিয়ে নেমেছিলো ওরা
মেতেছিলো হত্যার উৎসবে।
হায়েনার চোখ তাক করেছিলো নারীর জঠর;
কামনার আগুন তাদের জ্বলে ওঠেছিলো অগ্নি উৎসবের-
রাতে ঘরগৃহস্থালির পোড়া আগুনের লেলিহান
শিখার মতন।


ঘুমন্ত শিশুর বুক, বুদ্ধিজীবীর মাথার খুলি
যুবকের চোখ, নারীর নাভি বীভৎস কায়দায়
উড়িয়ে দিয়েছিলো তাদের তাক করা রাইফেল।
নিষ্ঠুর পুড়িয়ে দিয়েছিলো বাঙালির স্বপ্নসৌধ,
স্বাধীনতার সৌখিন সাধ।


আমাদের বাড়িগুলো, আমাদের সিঁড়িগুলো
হয়েছিলো ভস্মের স্তুপ, রক্তের নদী।
সবুজ ঘাসের ওপর অজস্র লাশের পাঁজর
ঢেকেছিলো রক্তের কার্পেট। কৃষক মজুর
ছাত্র জনতার রক্তের প্রতিটি ফোঁটার কষ্টের
কথা লিখে নিয়েছিলো শিমুল, পলাশ
আর রক্তজবার পাপড়ি। আর আমাদের
হৃদয়ে লিখা হয়েছিলো একটি নাম-সশ্রদ্ধ সম্মান
শেখ মুজিবুর রহমান।


সেদিন সাহসী শেখ মুজিব রাত্রি শেষের
মুয়াজ্জিনের আজানের মতন, হেমিলনের বাঁশিঅলার
মতন ঘোষণা দিলেন স্বাধীনতা। সেই ঘোষণায়
রক্ত ভেজা রাজপথ হতে, স্বপ্ন পোড়া ছাই হতে
ফিনিক্স পাখির মতন নবতর জীবন পেয়ে
জেগে ওঠলো জনতা; শুরু হলো প্রতিরোধ
আকাশে বাতাসে বিকট শব্দে ধ্বনিত হলো- জয় বাংলা।


বাঙালি দমনের হীন কৌশল ব্যর্থ করে
প্রদীপ্ত যুবক করপুটে ধারণ করেছিলো পতাকা
বিবসনা বোনের, মায়ের রক্তাক্ত উরুতে অঙ্কিত
হয়েছিলো শোভন মানচিত্র
সমস্বরে বলে ওঠেছিলো- স্বাধীনতা চাই, স্বাধীনতা
সুদীর্ঘ সংগ্রাম শেষে
বায়ান্নের বিষণ্ন  বর্ণমালায় লিখা হলো-
স্বাধীনতা এবং স্বাধীন বাংলাদেশ।
১৫-০৩-২০২১