দক্ষিণের খোলা জানালা গলে অহর্নিশ
অলক্ষ্যেই আলয়ে মলয় করে যাতায়াত।
কপালে-কব্জিতে-বুকে-মুখে-চোখে বুলায়
রমনীয় হাত। জানালার পাশে নীরবে
দাঁড়ানো শুভ্র কামিনীর খোলা বুক থেকে
সুগন্ধি এনে আমার শরীরে মাখে সারারাত।
হৃদয়ে জাগে শিহরণ, মনে লাগে দোলা
আকাশের নীলে ভাসে চাঁদের ভেলা।
জোছনা হেসে লুটোপুটি খায়-সফেদ বিছানায়।


মাদলের রাগে বাদল আসে, কামিনী লুটায়-
সবুজ ঘাসে।
উঠানে পড়ে কামার্ত কামিনীর বিবস্ত্র কঙ্কাল;
লুণ্ঠিত যৌবনের বিষাদে ভাসে।


মলয়ের হাত থেকে মুছে যায় কামিনীর ঘ্রাণ।
সুহৃদ মলয় এনে দেয় কদম কেতকীর সুবাস।


পুষ্পিত কেতকীর কচি হাত হয়ে ওঠে ব্যাকুল
কম্পিত করতলে সে হাত রাখতেই করুণ
আর্তনাদে ভূঁইতে লুটায় প্রেয়সী বকুল।


শরতের হাত ধরে সঙ্গোপনে শেফালী চলে য়ায়
অভিসারে- নদীর ধারে কাশবনে। বেচারা হেমন্ত
নতুন দিনের স্বপ্ন বুনে।


আমার কিছুই ভালো লাগে না। দৃষ্টি পড়ে থাকে
বসন্তের ওপারে। কখন আসবে ফিরে সুহাসিনী
ঋতুবতী যুবতি কামিনী; আবার হেসে ওঠবে
শোকার্ত বকুল। হৃদয় আকুল- সোহাগে নাচাবে
আধমরাদের বাঁচাবে সুবাস ঢেলে- হেসে খেলে।


বৃক্ষদের কাছে, সময়ের কাছে করি নিবেদন,
দাও ফিরিয়ে বসুধার হৃত যৌবন।
সুগন্ধ ঢেলে দাও মলয়ের শরীরে
কামিনী-কদম-কেতকী-শেফালী-বকুল আসুক ফিরে।
ধূলি-ধূসরিত দুর্গন্ধময় পৃথিবীর মানুষ বুক ভরে নিক
স্বস্তির নিঃশ্বাস- বেঁচে থাকুক বাঁচিবার আশ।
৪-৫-২০১৮