পোড় খাওয়া হৃদয়
........................


তুমি
চলে গেছো
বুকের পাঁজর ভেঙে
বিশ্বাস করো এতে হৃদয়ে
এতটা রক্তক্ষরণ হয়নি কিংবা কঠিন
কোনো যন্ত্রণাও অনুভব করিনি যতটা করছি
কোথায় কেমন আছো জানার অধিকার হরণ করায়!
রাতের নিঃসঙ্গ নির্জনতায় যখন মনে পড়ে তোমায়
মুঠোফোনে হাতে তুলে আবার রেখে দিই
তোমার সে আকুতিভরা ওয়াদা পালনে-
"দয়াকরে সামনে এসো না,
কিংবা ফোনও করো
না কোনোদিন
আর।"
তোমার
সে নিষেধাজ্ঞা
ভাঙার সাহস যতবার
দেখিয়েছি ততবারই আরো কঠোর
হয়েছো, নির্মমতার সর্বোচ্চ শিখর থেকে
শিলাখণ্ড ছুড়ে মেরেছো, রক্তাক্ত করেছো হৃদয়!
তবু বাঙালিয়ানায় ভর্তা-ভাত খেয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলার
মতো পাশে থাকার অমল আনন্দে তৃপ্তির
ঢেকুর
তুলেছি, নির্বিবাদে হজম করেছি অবহেলা অবজ্ঞার
সকল যন্ত্রণা! আমাদের পোষা বিড়ালের
দুটি বাচ্চা হয়েছে। বাচ্চাগুলো
মায়ের অবর্তমানে সারক্ষণ
কাতরকণ্ঠে কাঁদে।
নিনিত
এবং নিশিতা
যখন মা মা
করে রাতে ঘুমের মধ্যে
কেঁদে ওঠে তখন বুক বিছিয়ে
দিলেও থামতে চায় না। তুমিই বলো,
বাবার ভাঙা পাঁজরের পশমী বুকে শিশুরা কি
কখনও মায়ের বুকের নরোম কোমল উষ্ণতা পায়?
ছানাগুলোর কান্না শুনে মা বিড়াল দৌড়ে
এসে বুকে নিয়েছে ছানাদুটি পরম
সুখে চোখ বন্ধ করে
কেমন চুকচুক করে
মায়ের বুকের
দুধ
খেয়ে মায়ের
শরীরে আনন্দে গড়াগড়ি
দিচ্ছে। তুমি কি পারোনা
এমন করে দৌড়ে এসে অন্তত
সন্তান দুটিকে বুকের উষ্ণতা দিয়ে আদর
দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিতে; আমি নাহয় ততক্ষণ বাইরে বাইরেই ঘুরে বেড়ালাম চিত্তের বাইরে যখন
থাকতে পারছি বাড়ির বাইরে থাকতে কোনো কষ্টই হবে না আমার! তুমি মাঝে মাঝ
এসে সন্তান দুটিকে মায়ের আদর
দিয়ে যেও। কথা যখন
দিয়েছি, অধিকার যখন
ছেড়ে দিয়েছি,
তখন
তোমার
সামনে আর
কোনোদিন যাবো না।
কথা দিলাম। বিশ্বাস করো
তোমার অমর্যাদা কোনোদিন করিনি, করবও
না আর। তোমার সুখের বাগানে তুমি
রঙিন প্রজাপতি হয়ে ঘুরে বেড়াও তোমার চলার
পথে বাঁধা হতে আমি চাই না। বিত্তের
সুখ দিতে না পারলেও চিত্তের সুখ
দিতে এখনও উন্মুখ আমার এই
পোড় খাওয়া হৃদয়! পারলে
ফিরে এসো এই
জলশূন্য মৃতপ্রায়
উদ্যানে!
১১-১০-২০১৯