ভুল বানানটা ভুল করে অহরহ “ভূল” লিখি
আবার অনেক ভুল বানান দেখে দেখে শিখি।
সান্ত্বনাকে “শান্তনা” লিখে সান্ত্বনা কি পাই?
ব্যানার ফেস্টুনে বাংলা বানানে ভুলের অন্ত নাই।
শ্রদ্ধাঞ্জলি ফুলের ডালায় “শ্রদ্ধাঞ্জলী” হয়ে রয়
ভুল বানানে প্রতিযোগিতায় “প্রতিযোগীতা” হয়।
স্বাগতকে মধুর করে লিখি “স্বাগতম”
বাঙালিকে “বাঙ্গালী” লিখে অনেক নরাধম।
সরণিতে “স্মরণী” লিখি পাথর খোদাই করে
“পরে” লিখি ভুল করে ছাদ হতে পড়ে।
“ধারনা” যে ধারণা হবে সেই ধারণাই নাই;
সাধারণকে “সাধারন” লিখি টের কি মোরা পাই?
কি এবং কী এর মধ্যে তফাত বুঝি না
“কী” লিখতে “কি” লিখি অর্থ খুঁজি না।
দ্বীপের মধ্যে “দীপ” এসে যায়, দিনে আসে “দীন”
ঋণের চাপে নাকাল হয়ে লিখে ফেলি “ঋন”।
“পরিস্কার” লিখে করি আবার কী পরিষ্কার ভুল
“দূর্গা” লিখে দুর্গা দেবীর হই যে চক্ষুশূল।
পাণিতে যদি জল থাকে কোন ক্ষতি নাই
পাণিকে যদি “পানি” লিখি হাতে কষ্ট পাই।
দ্বন্দ্ব লিখতে দন্দ্বে পড়ে হয়ে যায় “দন্দ”
প্রচুর অর্থে “বেশী” লিখি খুঁজি না ভালো মন্দ।
টাকা দিয়ে ইংরেজি শিখি বাংলাতে জ্ঞান নাই
ন্যূনতমকে “নূন্যতম” লেখা দেখতে পাই।
মন্ত্রিসভায় যত্ন করে বসাই “মন্ত্রীসভা”
ভুল করলে বাব বলতেন, “মানুষ কবে হবা”?
পরীক্ষা পাস করে লিখি “পাশ” খুশি মনে
একই শব্দ নানানভাবে লিখি নানান জনে।
পত্রের গায়ে “সুত্র” লিখি সূত্রের বরাত দিয়ে
কত “ধরণের” ভুল লিখি ধরন লিখতে গিয়ে।
“স্বার্থক” স্থলে সার্থক লিখলে লেখা সার্থক হয়
সপরিবার সঠিক শব্দ “স্বপরিবার” নয়।
শব্দের শেষে বিসর্গকে দিয়ে বিসর্জন
“আপাততঃ” নয়, আপাতত রাখব তা স্মরণ।
সুষ্ঠুভাবে নিয়ম মানব “সুষ্ঠ” লিখব না
ভুল লেখা দেখে দেখে ভুল শিখব না।
ফুলেল ভুলে “ফুলের” লিখে জানাই শুভেচ্ছা
শেষ করা কি যাবে লিখে বানান ভুলের কেচ্ছা।


কাব্য কথায় লিখলাম কিছু ভুলের উদাহরণ
আরও কত ভুল লিখি মনে আসে না স্মরণ।
অন্য ভাষায় সজাগ দৃষ্টি বাংলায় অচেতন
শুদ্ধ বাংলা লিখতে সবাই হবো সচেতন।
অভিধানটা কাছে রাখতে যদিও কষ্ট হয়
মোবাইলটা তো সারাক্ষণই হাতের মধ্যে রয়।
বানান শুদ্ধির অ্যাপসটা যদি নামিয়ে রাখি নেটে
খুব সহজেই দেখতে পারি সফটওয়্যারে ঘেটে।
চর্চা করলে অল্প দিনেই ভুলের পারদ নামে
বাংলা ভাষা পেয়েছি যে অনেক প্রাণের দামে।
১৩-১২-২০১৭